হঠাৎ ঝুম বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে নগরবাসী

Sadek Ali
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৮:১৫ অপরাহ্ন, ০১ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, ০২ নভেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

বৃষ্টি হলেই যেন দুর্ভোগের নগরীতে পরিণত হয় রাজধানী। একদিকে পানিতে ডুবে যায় সড়ক, অন্যদিকে দেখা দেয় ভয়াবহ যানজট। এতে ভোগান্তির আর অন্ত থাকে না নগরবাসীর। তবে নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়, ভোগান্তি বাড়ে সাধারণ মানুষের। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে সিটি করপোরেশন ও ওয়াসাকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শনিবার দুপুরের পর থেকেই রাজধানী ঢাকার আকাশ ছিল মেঘলা। বিকেলের দিকে আকাশ আরও কালো হয়ে যায়। ঝরতে থাকে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। সন্ধ্যা নামার আগেই বিকেল পাঁচটার পর থেকেই শুরু হয় ঝুম বৃষ্টি, যা এখনো চলমান। তবে এই ঝুম বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। বিশেষ করে, সকালে বাসা থেকে অফিসের জন্য ছাড়া ছাড়া বেরিয়ে যারা সন্ধ্যায় আবার বাসায় ফিরছেন, তারা পড়েছেন বেশি বিপাকে। এই সময়ের বৃষ্টিতে ভিজলেই ঠান্ডা লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল, এই আশঙ্কায় অনেকেই অফিস থেকেই বেরিয়েও আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন দোকানপাট ও ছাউনিতে। এদিন সন্ধ্যার দিকে ডেমরা-যাত্রাবাড়ি, মতিঝিল, পল্টন, শাহবাগ, শাহজাদপুর, নতুনবাজার, গুলশান-২, নদ্দা এবং বসুন্ধরাসহ আরও বেশ কিছু এলাকা ঘুরে এমন সব চিত্রই দেখা গেছে। অন্যদিকে যারা দ্রুত বাসায় ফেরায় টানে রিকশা কিংবা অটোরিকশায় চড়ে বসছেন, তাদের গুণতে হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া। যাটজটের দোহাই দিয়ে এমনিতেই রিকশাওয়ালারা স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি ভাড়া দাবি করেন। বৃষ্টি নামলে তাদের দাম যেন আরও চড়া হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়েই চলাচল করতে হয় যাত্রীদের। আজও তার ব্যতিক্রম নয়।

আরও পড়ুন: মোহাম্মদপুরে মুরগির দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে যুবক নিহত, আটক ২

এদিকে যারা খরচ কমানোর জন্য বাসের মতো গণপরিবহনে চলাচল করেন, তাদের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। কারণ, অফিস ছুটির এই মুহূর্তে অনেকটা যুদ্ধ করে বাসে উঠতে হয়। এসময় কানায় কানায় পূর্ণ থাকে বাসগুলো, গেটেও লোকজনকে ঝুলতে দেখা যায়। এই পরিস্থিতিতে বৃষ্টি নামলে সেই বাসে ওঠা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। অগত্যা অনেকেকে পায়ে হেঁটেই রওনা দিতে হয় গন্তব্যে। আর যারা হাঁটতে অভ্যস্ত নন, তাদের বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হয় দীর্ঘক্ষণ, অথবা ভিড় ঠেলে উঠতে হয় বাসে। আজও বৃষ্টির মধ্যে তেমনই চিত্র দেখা গেছে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে। বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন সড়কে হরেক মালের ব্যবসা করা অস্থায়ী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও। ছাউনি ছাড়াই তারা মালপত্র নিয়ে বসে পড়েন সড়কে। কিন্তু সন্ধ্যার এই বৃষ্টিতে দোকানপাট গুছিয়ে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে হয়েছে তাদেরও। অফিস ছুটির এই সময় মোটামুটি ভালোই বেচাকেনা হয় সড়কের অস্থায়ী এসব দোকানপাটে। কিন্তু ঝুম বৃষ্টিতে সেই বেচাবিক্রি উঠেছে চাঙ্গে। এছাড়া এই বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিভিন্ন কাজে বের হওয়া নানা শ্রেণি-পেশার মানুষেরাও। এদিন সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, দক্ষিণ ছত্তিশগড় ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করা সুস্পষ্ট লঘুচাপটি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে লঘুচাপে পরিণত হয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে যেতে পারে। তবে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে নভেম্বরের প্রথম দিনের এই বৃষ্টি দেশে হালকা শীত নামিয়ে আনতে পারে বলে আলোচনা সাধারণ মানুষদের মধ্যে।