মেট্রোরেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু শুক্রবার
স্বতন্ত্র চাকরি-বিধিমালা প্রণয়ন ও প্রকাশে দীর্ঘসূত্রতার প্রতিবাদে ১২ ডিসেম্বর শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও যাত্রীসেবা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) নিয়মিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পূর্বঘোষিত আলটিমেটাম অনুযায়ী ৯ ডিসেম্বরের মধ্যেও চাকরি-বিধিমালা প্রকাশ না হওয়ায় তারা এ কর্মসূচিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। একই সঙ্গে প্রতিদিন ডিএমটিসিএল প্রধান কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলবে বলেও জানানো হয়।
ডিএমটিসিএলের কর্মচারীদের অভিযোগ, ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি গঠনের পর প্রায় ১২ বছর পার হলেও ৯০০-র বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য কোনো স্বয়ংসম্পূর্ণ চাকরি-বিধিমালা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে উন্মুক্ত নিয়োগে যোগ দেওয়া এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়মিত দায়িত্ব পালন করলেও ছুটি, গ্র্যাচুইটি, সিপিএফ, শিফট ভাতা/ওভারটাইম, গ্রুপ ইনস্যুরেন্সসহ বিভিন্ন মৌলিক সুবিধা পাচ্ছেন না বলে তারা জানান।
আরও পড়ুন: রিজওয়ানা হাসান তথ্য, আদিল এলজিআরডি ও আসিফ নজরুল যুব ও ক্রিয়ার দায়িত্বে
তাদের দাবি, গত ১২ সেপ্টেম্বর উপদেষ্টা কমিটির নির্দেশনায় ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে সার্ভিস রুল তৈরি করার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে আন্দোলনের পর ২০ মার্চের মধ্যে সার্ভিস রুল চূড়ান্ত করার আশ্বাস দিলেও সে প্রতিশ্রুতিও পূরণ হয়নি। এর মধ্যেই গত ১০ ডিসেম্বর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্মচারীদের জানান, সার্ভিস রুলের বেশিরভাগ ধারা নিয়ে পরিচালনা পর্ষদ একমত হলেও ‘বিশেষ বিধান’ সংক্রান্ত অধ্যায় নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। এই বিধান মেট্রোরেল প্রকল্পের কর্মীদের ডিএমটিসিএলে আত্মীকরণ সংক্রান্ত, যা নিয়মিত কর্মচারীদের মতে দেশের প্রচলিত আইন এবং সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
কর্মচারীদের অভিযোগ, পরিচালনা পর্ষদ বিতর্কিত বিধানটি বাদ দিতে প্রস্তুত থাকলেও ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষের চাপের কারণেই সার্ভিস রুল প্রকাশ কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। ফলে আলটিমেটাম অনুযায়ী প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হওয়ায় তারা ১২ ডিসেম্বর থেকে পূর্ণ কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে। এতে মেট্রোরেলের প্রতিদিনের কয়েক লাখ যাত্রী ভোগান্তিতে পড়তে পারেন বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সংসদ নির্বাচনের পর পদত্যাগ করতে চান রাষ্ট্রপতি: রয়টার্স
তবে কর্মচারীদের বক্তব্য—এই পরিস্থিতির সম্পূর্ণ দায়ভার ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে। ন্যায্য অধিকার, ক্যারিয়ার কাঠামো ও বেতন-সুবিধা নিশ্চিত করতে চাকরি-বিধিমালা প্রয়োজন; তাই আর কোনো আশ্বাস নয়, প্রকাশিত সার্ভিস রুল ছাড়া তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করবে না।





