আইজিপি বাহারুল আলমের অপসারণ ও বিচারের দাবি পিন্টুর স্ত্রীর
বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত স্বাধীন তদন্ত কমিশন এর প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে তৎকালীন স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) প্রধান ও বর্তমান আইজিপি বাহারুল আলমের অপসারণ এবং বিচারের দাবি জানিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ নাসিরউদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টুর স্ত্রী নাসিমা আক্তার কল্পনা।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে শহীদ পিন্টু স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি এ দাবি জানান। ‘নাসিরউদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টুকে কারাগারে হত্যা এবং ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তার নারকীয় হত্যাকাণ্ডে আইজিপি বাহারুল আলমের সম্পৃক্ততার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় তার অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই’—এ শিরোনামে আয়োজিত সভায় পিন্টুর সহযোদ্ধা এবং পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: এটিইউ প্রধানের সঙ্গে এফবিআই প্রতিনিধিদলের সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময়
“পিন্টুকে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হয়েছে”—নাসিমা আক্তার কল্পনা
সমাবেশে নাসিমা আক্তার কল্পনা বলেন, “নাসিরউদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টু দেশের জন্য, দলের জন্য জীবন দিয়েছেন। তিনি কখনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। অথচ ২০০৯ সালের জুনে ষড়যন্ত্র করে হাইকোর্ট চত্বর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।”
আরও পড়ুন: সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ গ্রেফতার
তিনি অভিযোগ করেন, তৎকালীন সিআইডি প্রধান কাহার আকন্দ পিন্টুকে সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার পর উত্তরা টিএফ সেলে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে ভয়াবহ নির্যাতনের মাধ্যমে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করা হয়েছিল। “আমি ওষুধ ও কাপড় নিয়ে গেলে আমাকে গেট থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পিন্টুকে আয়নাঘরসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে টর্চার করা হয়। বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য তাকে বারবার চাপ দেওয়া হয়”—যোগ করেন তিনি।
পরিবারের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ:
কল্পনা আরও অভিযোগ করেন, “তখনকার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী নেতা তাপস ও হাজী সেলিম বিভিন্ন সংস্থাকে ব্যবহার করে আমাদের পরিবারকেও নির্যাতন করে। আমার দেবরকে অপহরণ করে নির্যাতন করা হয়, ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে দেওয়া হয়।”
“আদালতের আদেশ অমান্য করে পিন্টুকে হত্যা করা হয়”
তিনি বলেন, হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে পিন্টুকে রাজশাহী কারাগারে স্থানান্তর করা হয় এবং সেখানে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। পরে স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে তৎকালীন এসবি প্রধান বাহারুল আলমের সম্পৃক্ততার বিষয়টি উঠে এসেছে।
কল্পনার অভিযোগ, “ভুয়া প্রতিবেদন তৈরি করে ঘটনাকে অন্যদিকে মোড় দিতে চেয়েছিলেন বর্তমান আইজিপি। এই মিথ্যা তথ্য প্রদানের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিচার চাই।”
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “স্বাধীন তদন্ত কমিশন যখন বলছে—বর্তমান আইজিপির সম্পৃক্ততা রয়েছে, তাহলে তাকে অবিলম্বে অপসারণ করে আইনের আওতায় আনতে হবে।”
সমাবেশে পরিবারের সদস্য ও নেতাদের উপস্থিতি:
প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন পিন্টুর ছেলে নাহাম আহম্মেদ, যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শহীদ পিন্টু স্মৃতি সংসদের সভাপতি রফিক আহমদ ডলার, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির সেলিমসহ পিন্টুর সহযোদ্ধা ছাত্রদল–যুবদল নেতারা।





