ইন্দোনেশিয়ায় ঘূর্ণিঝড়-বন্যা-ভূমিধসে মৃত্যু ৯১৬, নিখোঁজ ২৭৪
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা ও আচেহ প্রদেশজুড়ে চলমান বন্যা ও ধারাবাহিক ভূমিধসে মৃত্যুর সংখ্যা ভয়াবহভাবে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯১৬ জনে। এখনও খোঁজ মিলছে না কমপক্ষে ২৭৪ জন মানুষের। টানা ঘূর্ণিঝড়, মৌসুমি ঝড় এবং ভারী বর্ষণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে—শনিবার এমন তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
আচেহের তামিয়াং জেলায় খাদ্য, পানীয় ও প্রয়োজনীয় সামগ্রীর তীব্র সংকটে পড়েছে মানুষজন। বহু এলাকার সড়ক যোগাযোগ ভেঙে পড়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে গ্রাম–পল্লি। প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরকারি ত্রাণ পৌঁছাতে হিমশিম খাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন।
আরও পড়ুন: থাই–কম্বোডিয়া সীমান্তে নতুন সংঘাত: ভেস্তে যাচ্ছে ট্রাম্পের শান্তি উদ্যোগ
মাত্র ১৪ বছর বয়সী দিমাস ফিরমানসিয়াহ জানায়, সে ও তার সহপাঠীরা গত এক সপ্তাহ ধরে ইসলামি আবাসিক স্কুলের হোস্টেলে আটকা পড়ে আছে। পানির মজুত শেষ হয়ে যাওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে বন্যার পানি পান করছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, সরকারি সহায়তা সংগ্রহের জন্য কিলোমিটারের পর কিলোমিটার হাঁটতে হচ্ছে। তাও পর্যাপ্ত সহায়তা মিলছে না।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র–কানাডা সীমান্তে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প, সুনামির আশঙ্কা নেই
এরই মধ্যে প্রেসিডেন্ট প্রবাও সুবিয়ান্তো দাবি করেছেন—পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে। তবে সুমাত্রা ও আচেহের স্থানীয় প্রশাসন তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছে। তারা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দ্রুত জরুরি অবস্থা ঘোষণার অনুরোধ জানিয়েছে।
পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো বলছে, এ বিপর্যয়ের পেছনে রয়েছে বছরের পর বছর বন ধ্বংস, অবৈধ খনি খনন এবং দুর্বল পরিবেশ নীতি। তাদের দাবি—এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত বেশ কয়েকটি কোম্পানি, বিশেষ করে নর্থ সুমাত্রা হাইড্রো এনার্জি এবং স্বর্ণ উত্তোলনকারী এগিনকোর্ট রিসোর্সেস। উভয় প্রতিষ্ঠানই চীনের অর্থায়নে পরিচালিত।
রয়টার্স এসব কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
নভেম্বরের শেষ দিক থেকে শুরু হওয়া ঘূর্ণিঝড় সেনিয়া ও একাধিক মৌসুমি ঝড়ের প্রভাবে বন্যা ও ভূমিধসের মাত্রা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। সবচেয়ে বেশি ধ্বংসযজ্ঞ নেমেছে সুমাত্রা ও আচেহে—যেখানে বহু গ্রাম এখনো পানির নিচে এবং অনেক জায়গায় ভূমিধসের কারণে উদ্ধারকাজ মন্থর হয়ে পড়েছে।
সূত্র: রয়টার্স





