ন্যাটোর যেকোনো সদস্যদেশে হামলা চালাতে পারে রাশিয়া: ন্যাটো মহাসচিব

Sadek Ali
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:০৩ পূর্বাহ্ন, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১১:০৪ পূর্বাহ্ন, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটে সতর্ক করে বলেছেন, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে রাশিয়া ন্যাটোর যেকোনো সদস্যদেশে সামরিক আক্রমণ চালাতে পারে। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) জার্মানিতে এক ভাষণে তিনি বলেন, রাশিয়া ইতোমধ্যেই পশ্চিমা সমাজগুলোকে লক্ষ্য করে গোপন অভিযান বৃদ্ধি করেছে এবং পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে যেখানে আমাদের পূর্বপুরুষদের মতোই বড় যুদ্ধের মুখোমুখি হতে হতে পারে।

রুটের এই সতর্কতা পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মূল্যায়নের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যদিও মস্কো এসবকে ‘হিস্টিরিয়া’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

আরও পড়ুন: জাপানে ৬.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা জারি

এমন সময়ে এই সতর্কবার্তা এল যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন বন্ধের চেষ্টা করছেন। যদিও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্প্রতি দাবি করেছেন, ইউরোপ যুদ্ধ চাইলে রাশিয়া “এখনই প্রস্তুত”—তবে তাদের পক্ষ থেকে যুদ্ধ শুরু করার কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে ২০২২ সালে ইউক্রেনে আগ্রাসনের আগেও মস্কো একই ধরনের আশ্বস্তবার্তা দিয়েছিল।

রুটে বলেন, পুতিনের কথাবার্তায় আন্তরিকতা নেই। ইউক্রেনকে সমর্থন দেওয়া ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি সতর্ক করে বলেন, “ভাবুন তো যদি পুতিন তার লক্ষ্য অর্জন করে—ইউক্রেন পুরোপুরি দখল করে, ন্যাটোর সীমান্ত আরও দীর্ঘ হয়, এবং আমাদের ওপর সরাসরি আক্রমণের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।”

আরও পড়ুন: ঝড়-বৃষ্টিতে গাজায় মানবিক বিপর্যয়, ৮ মাসের শিশুর মৃত্যু

ইতোমধ্যে রাশিয়া তিন বছরের বেশি সময় ধরে যুদ্ধ-অর্থনীতি চালাচ্ছে। দেশটির কারখানাগুলো মাসে প্রায় ১৫০ ট্যাংক, ৫৫০ ইনফ্যান্ট্রি ফাইটিং ভেহিকল, ১২০ ‘ল্যানসেট’ ড্রোন এবং ৫০টির বেশি আর্টিলারি তৈরি করছে—কিয়েল ইনস্টিটিউটের এক রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে। বিপরীতে পশ্চিম ইউরোপের শিল্পকারখানা এখনও সে সক্ষমতার কাছেও নয়। বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়ার সমান উৎপাদন সক্ষমতা অর্জনে পশ্চিমা দেশগুলোর বহু বছর লাগবে।

ফ্রান্স ও জার্মানি ইতোমধ্যেই ১৮ বছর বয়সী যুবকদের জন্য স্বেচ্ছাসেবী সামরিক সেবা পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। এদিকে সাইবার হামলা, বিভ্রান্তিমূলক প্রচার, এবং ন্যাটো দেশগুলোর সামরিক ঘাঁটির কাছে ড্রোন পাঠানোর মতো ‘গ্রে-জোন’ বা ‘হাইব্রিড’ যুদ্ধ কার্যক্রমও বেড়েছে।

রুটে বলেন, এসব উদ্বেগজনক হলেও ন্যাটো সদস্যরাষ্ট্রে সরাসরি সামরিক হামলার তুলনায় তা সামান্য। “ন্যাটোর প্রতিরক্ষা এখন পর্যন্ত ধরে রাখা সম্ভব হলেও সংঘাত ইউরোপের দরজায়। অনেকেই এখনো ঝুঁকির গুরুত্ব অনুভব করছেন না,” তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি আরও বলেন, সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে দ্রুত প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াতে হবে এবং সামরিক সক্ষমতা জোরদার করতে হবে, কারণ নিরাপত্তার ঝুঁকি দ্রুত বাড়ছে।