চারবার প্রধানমন্ত্রী হলেও সম্পদের প্রতি শেখ হাসিনার এত লোভ: বিচারক
পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত তিনটি দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার আগে কড়া ভাষায় মন্তব্য করেছেন পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, চারবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও শেখ হাসিনার এত সম্পদের প্রয়োজন কেন—এ প্রশ্নে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন। তাঁর মন্তব্যে উঠে আসে “জনসম্পদের প্রতি লোভ” এবং “জাতির জন্য বড় ধাক্কা”–র মতো শব্দ।
বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার পূর্ববর্তী পর্যবেক্ষণে বিচারক জানান, গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর প্রচারিত একটি সংবাদে উল্লেখ ছিল—সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজউকের কর্মকর্তাদের সহায়তায় কূটনৈতিক জোনের ২৭ নম্বর সেক্টরে নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের নামে ৬০ কাঠা জমির ৬টি প্লট নেন।
আরও পড়ুন: জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের ৫ বছরের কারাদণ্ড
রায় পড়ার সময় আদালত আরও বলে, শেখ হাসিনা প্লট বরাদ্দের জন্য যে দুটি এফিডেভিট জমা দেন, সেগুলো নোটারি বা ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা প্রত্যায়িত ছিল না, ফলে সেগুলোর আইনগত মূল্য নেই। এফিডেভিটে তাঁর স্বামী ওয়াজেদ মিয়ার নামে ১৯৭২ সালে পাওয়া একটি প্লটের তথ্যও গোপন করা হয়েছে বলে আদালত উল্লেখ করে।
বিচারকের ভাষায়, দেশের সর্বোচ্চ নির্বাহী হয়ে তিনি কেনো এই সম্পদ নিতে গেলেন? চাইলে প্লট গ্রহণ না করেও থাকতে পারতেন। সেই সুযোগ একজন সাধারণ নাগরিকের প্রাপ্য ছিল।
আরও পড়ুন: হাসিনা-জয়-পুতুল ছাড়া আরও যাদের সাজা হলো
তিনি আরও বলেন, রাজউক নিয়ম না মানলে জনগণের আস্থা কোথায় থাকবে? তারা সংগঠিতভাবে নিয়ম ভেঙেছে। দুর্নীতি রোধে সব প্রতিষ্ঠানে **হুইসেল-ব্লোয়িং ব্যবস্থা** চালুর পরামর্শ দেন বিচারক—যেখানে অনিয়ম দেখলে কর্মচারীরা নিরাপদে তা জানাতে পারবেন।
পর্যবেক্ষণে তিনি আরও জানান, ২০২২ সালের ৩ আগস্ট শেখ হাসিনা নিজের প্লট বরাদ্দ নেন, মাত্র এক মাস পর ছেলের জন্য এবং পরের মাসে মেয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সুপারিশপত্র পাঠানো হয়। এছাড়াও বোন ও বোনের সন্তানদের জন্যও সুপারিশ করা হয়।
বিচারকের মন্তব্য—“রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে জনগণ কী আশা করবে, যখন শীর্ষ পর্যায়েই এ ধরনের অনিয়ম দেখা যায়?”





