সরকারি চাকরি আইন সংশোধন অধ্যাদেশ জারি
কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য বা সমবেতভাবে কাজে বিরত থাকলে বাধ্যতামূলক অবসর বা বরখাস্ত করা হবে
বহুল আলোচিত সরকারি চাকরি আইন দ্বিতীয় সংশোধনীর অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার। বুধবার (২৩ জুলাই) অধ্যাদেশটি গেজেট আকারে জারি করা হয়েছে।
গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদ সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে তা অধ্যাদেশ আকারে জারির প্রস্তাবে সম্মতি দেয়। এর প্রতিবাদে ২৪ মে থেকে সচিবালয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের আন্দোলনের মধ্যেই ২৫ মে রাতে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার।
আরও পড়ুন: নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার কোনো ইস্যু নেই: আইন উপদেষ্টা
সরকারি চাকরি আইনের সংশোধিত অধ্যাদেশে পুরোনো আইনের সঙ্গে ‘৩৭ক’ নামে একটি ধারা সংযোজন করা হয়। নতুন এই ধারায় কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী দায়ী হলে সাত দিন করে নোটিশ দেওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা রাখার বিধান রাখা হয়েছিল।
অনুমোদনের আগে অধ্যাদেশে ‘আচরণ বা দণ্ড সংক্রান্ত’ বিশেষ বিধানে যা ছিল-
আরও পড়ুন: ইসির ২৩ কর্মকর্তাকে বদলি
১. কেউ যদি এমন কাজ করে যা অনানুগত্যের শামিল এবং যা অন্য কর্মচারীদের মাঝে অনানুগত্য সৃষ্টি করতে পারে বা শৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটাতে পারে বা অন্যের কর্তব্য পালনে বাধার সৃষ্টি করতে পারে; ২. এককভাবে বা সম্মিলিতভাবে ছুটি ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে, কাউকে কর্মবিরতিতে বাধ্য বা উসকানি দেওয়া, অন্য কর্মচারীকে কাজে বাধা দেওয়া হলে; ৩. কোনো কর্মচারীকে তার কর্মস্থলে আসতে বা কাজ করতে বাধা দেওয়া হলে তা দণ্ডনীয় অপরাধ হবে।
অধ্যাদেশটিতে এসব অপরাধের শাস্তি হিসেবে পদাবনতি বা গ্রেড অবনতি, চাকরি থেকে অপসারণ কিংবা চাকরি থেকে বরখাস্ত করার বিধান রাখা হয়েছিল।
এসব ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযোগ গঠন, ৭ দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপযুক্ত জবাব না দিলে আবার সাত দিনের নোটিশ দেওয়ার পর তা বিবেচনা করে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে বলা হয়েছিল।
অধ্যাদেশটিতে অভিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীর আপিল করার সুযোগও রাখা হয়েছিল। দণ্ডের নোটিশ হাতে পাওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে আপিল করার পারবেন বলা হয়েছিল। সংশোধিত অধ্যাদেশটিকে তখন ‘কালো আইন’ আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিল সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে গত ৪ জুন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কমিটি আন্দোলনরত সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দের আলাপ-আলোচনা করে অধ্যাদেশটি সংশোধনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আন্দোলনকারীদের আপত্তি আমলে নিয়ে গত ৩ জুলাই উপদেষ্টা পরিষদের ৩২তম বৈঠকে এ সংশোধিত সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ অনুমোদন করে উপদেষ্টা পরিষদ।





