কাষ্টগংগা বিল শুকিয়ে মৎস্য আহরণ
সোয়া ১১ কোটি টাকার ফসল হানির অভিযোগ ইজারাদারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের

মো আব্দুল শহীদ সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের আওতাভুক্ত কাষ্টগংগা বিল শুকিয়ে মাছ শিকারের ফলে ফসলি জমি আবাদে পানি সংকট দেখা দেওয়ায় বিলের ইজারাদার ও সাব ইজারাগণের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই কাষ্টগংগা বিল শান্তিগঞ্জ ও দোয়ারাবাজার উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষে বিস্তৃত রয়েছে। সোমবার দেড় হাজার একর জমির ক্ষতি ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা উল্লেখ করে কৃষকদের পক্ষে একই ইউনিয়নের খাগুড়া গ্রামের মৃত তাহির আলীর পুত্র নূর হোসেন (৬৫) সুনামগঞ্জের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। বাদী নূর হোসেনের দায়েরকৃত মামলার প্রেক্ষিতে অভিযোগের বিষয়ে তদন্তপূর্বক সাক্ষীদের জবানবন্দিসহ আগামী ১৯ মার্চের পূর্বে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আমল গ্রহণকারী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমান সিলেট অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নৌ-পুলিশের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
যার স্মারক নং-৪৯ তাং-০৩.০২.২০২৫ইং। দায়েরকৃত সি, আর মোকদ্দমা নং- ২৫/২০২৫ ইং (শান্তিগঞ্জ) মামলায় সুনামগঞ্জ পৌরসভার সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত আব্দুর রহিমের পুত্র আতাউর রহমান (৫৫), শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলা আসামপুর গ্রামের ইনাতনগর আসামপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লি. সম্পাদক আব্দুল মালিক, সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের জলালপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত গোলাম মস্তফার পুত্র মোবারক আলী (৪৮)কে বিবাদী করা হয়েছে। দ.বি. আইনের ৪৩৯/৩৪ ধারায় দায়েরকৃত এই মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, বিবাদী শান্তিগঞ্জ উপজেলার আসামপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লি: এর সম্পাদক আব্দুল মালিক তার সমিতির অনুকূলে জেলা প্রশাসক হতে ৭ আগস্ট ২০২৩ ইং তারিখে জেলা প্রশাসক কার্যালয় সুনামগঞ্জ রাজস্ব শাখার স্মারক নং-০৫.৪৬.৯০০০.০০৮.১২.০১৭.২৩-১৩২২(৬) আলোকে ভূমি মন্ত্রণালয় সায়রাত-১ অধিশাখা এর ১৩/০৩/২০২৩ ইং তারিখে স্মারক নং-৩১.০০.০০০.০৫০.৬৮.০০৫.২৩.২১০ নং স্মারকে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক হতে কাষ্টগংগা বিলের লীজ গ্রহণ করেন। ১নং বিবাদী আতাউর রহমান লীজ গ্রহিতা আব্দুল মালিক হতে সাবলীজ গ্রহণ করে কাষ্টগংগা বিলে গত অগ্রহায়ণ মাস হতে মাছ শিকার শুরু করেন। এক পর্যায়ে কাষ্টগংগা বিল শুকিয়ে মাছ শিকার করেন।
আরও পড়ুন: কাপাসিয়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও বৃক্ষরোপণ
মামলায় উল্লেখ করা হয়, দেখার হাওর মৌজার বোরো জমি আবাদের একমাত্র মাধ্যম কাষ্টগংগা বিলের পানি। ওই কাষ্টগংগা বিলের পানি দিয়ে দেখার হাওর মৌজার প্রায় ১৫০০ একর জমি চাষাবাদ হয়ে থাকে। গত জানুয়ারি কাষ্টগংগা বিলের পানি নিষ্কাশনের জন্য বাঁধ কেটে দেয় এবং পরদিন বিকাল ৫ ঘটিকা পর্যন্ত পানি নিষ্কাশিত হয়ে বিলের তলা শুকিয়ে যায়। দেখার হাওর মৌজার জমির কৃষকগণ নিজের টাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেছেন। তারা অধিক লাভের লোভে কৃষকগণের অজ্ঞাতে কাষ্টগংগা বিলের পানি নিষ্কাশন করে ফেলে। বর্তমানে পানির অভাবে ধানগাছ মরে যাচ্ছে। পানি সংকটের কারণে দেড় হাজার একর জমির প্রায় ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।