ট্রলারডুবিতে প্রাণ গেল কনস্টেবল সাইফুলের, কফিনে ফিরলেন গ্রামের বাড়ি

নোয়াখালীর হাতিয়ায় ট্রলারডুবিতে প্রাণ হারিয়েছেন পুলিশ সদস্য কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম (৩০)। জীবিত নয়, তিনি ফিরেছেন কফিনে মোড়ানো নিথর শরীর হয়ে। প্রিয় সহকর্মী আর অসহায় বাবা-মায়ের চোখের জলে ভিজে গেছে চরশাহীর আকাশ-বাতাস। সোমবার (২ জুন) মধ্যরাতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চরশাহী ইউনিয়নের গোপাল বাড়িতে দ্বিতীয় জানাজা শেষে দাফন করা হয় তাকে।
মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আব্দুল্লাহ আল ফারুক।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন নিয়ে বিএনপি'র দুই গ্রুপের সংঘর্ষ
পুলিশ সূত্র জানায়, নিহত সাইফুল নোয়াখালী পুলিশ লাইন্সে কর্মরত ছিলেন। সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশ লাইন্স মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে ফ্রিজিং ভ্যানে করে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের বাড়িতে। জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয় দাদা নুরুজ্জামানের কবরের পাশে।
আরও পড়ুন: সৌন্দর্যের স্বর্গরাজ্য ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর কোথায় গেল?
নিহত সাইফুল চরশাহী গ্রামের সিরাজুল ইসলাম ও রহিমা বেগম দম্পতির একমাত্র সন্তান। মাত্র তিন বছর ধরে নোয়াখালীর বিভিন্ন থানায় দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
বাবা সিরাজুল ইসলাম বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে ভারী বস্তু সন্তানের লাশ। সেই লাশ আজ আমাকে কাঁধে নিতে হয়েছে। সাইফুলকে হারিয়ে আমরা নিঃশেষ। এখন আর কোনো অপেক্ষা নেই, কোনো অভিমান নেই। কবরেই তার চিরস্থায়ী ঠিকানা।
নিহত সহকর্মীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাইফুলের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এসপি আব্দুল্লাহ আল ফারুক। তিনি বলেন, সাইফুল ছিলেন কর্তব্যপরায়ণ, সৎ ও সাহসী। তার এই আত্মত্যাগ আমাদের পুলিশ বাহিনীর জন্য গর্বের ও চিরস্মরণীয় এক অধ্যায় হয়ে থাকবে। আমরা তার পরিবারের পাশে আছি এবং থাকবো।
৩১ মে (শুক্রবার) দুপুর ৩টার দিকে ভাসানচর থেকে হাতিয়ার করিমবাজার ঘাটে যাওয়ার পথে যাত্রীবাহী একটি ট্রলার ডুবচরে আটকে গিয়ে ফেটে যায় এবং উল্টে যায়। এতে ট্রলারে থাকা ৩৯ জনের মধ্যে ৩৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থলে মারা যান গিয়াস উদ্দিন ও রোহিঙ্গা নারী হাসিনা খাতুন।
দুই দিন নিখোঁজ থাকার পর সোমবার বিকেলে ভেসে ওঠে কনস্টেবল সাইফুলের মরদেহ নোয়াখালীর চানন্দী ইউনিয়নের দরবেশ বাজার সংলগ্ন এলাকায়। এখনও নিখোঁজ রয়েছে এক রোহিঙ্গা শিশু।