কনস্টেবল জয়ের নেতৃত্ব নিয়ে পুলিশে নানা প্রশ্ন

Any Akter
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন, ১০ অগাস্ট ২০২৪ | আপডেট: ৮:২৫ পূর্বাহ্ন, ১৪ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দাবী নিয়ে হঠাৎ পুলিশের 'নেতা' হয়ে উঠা পুলিশ কনস্টেবল সোয়াইবুর রহমান জয় কে নিয়ে পুলিশ সদস্যের মাঝে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। কে এই জয়। 

ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এই পুলিশ কনস্টেবল 'পুলিশ থিয়েটার' এর সদস্য। গত আগস্টে অভিশপ্ত আগস্ট মঞ্চ নাটকে শেখ কামাল চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় তাকে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এলোমেলো অবস্থায় একটি কথিত 'কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি'র নেতা হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করেছেন জয়। পুলিশের বিশৃঙ্খলা তৈরির উদ্যোগ হিসেবে তার নাম দিয়ে উস্কানিমূলক নানা বার্তা পাঠানো হচ্ছে সাধারণ পুলিশ সদস্যদের কাছে।

আরও পড়ুন: সেনাবাহিনী প্রধানের নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো অ্যাকাউন্ট নেই: আইএসপিআর

পুলিশের কনস্টেবল থেকে পদোন্নতি প্রাপ্ত একজন এএসআই জানান, ডিএমপির সদ্য সাবেক পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমানের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় পুলিশ থিয়েটার নামের এই নাট্য দলটি গঠন করা হয়। সাধারণত একজন পুলিশ কনস্টেবলের পক্ষে কমিশনারের মত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছাকাছি যাওয়া কঠিন। তবে নাট্যদলের সদস্য হিসেবে বিভিন্ন সময় ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের কাছে দেখা যেত সোয়াইবুর রহমান জয়কে।

সোয়াইবুরের নাম দিয়ে আওয়ামী পুলিশের প্রভাবশালী কর্মকর্তারা পেছন থেকে এসব করাচ্ছেন বলে মনে করেন সাধারণ পুলিশ সদস্যরা।  

আরও পড়ুন: দুর্নীতির তদন্তে সাবেক গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নরদের ব্যাংক হিসাব তলব

অনেক পুলিশ সদস্যই থাকে বিশেষ এলাকার বিগত সরকারের সুবিধাভোগী হিসাবেই চিনে। তারা বিভিন্ন ছবিতে ছবিতে পুলিশ কমিশনার হাবিবুরসহ ঊর্ধ্বতন কয়েক কর্মকর্তার সঙ্গে কনস্টেবল সোয়াইবুরকে চিহ্নিত করতে দেখা যায়।

আরেকজন সাব ইন্সপেক্টর পুলিশের গোপালগঞ্জ বেল্টের কর্মকর্তাদের এই উস্কাণীর জন্য দায়ী করে বলছেন, হাবিব স্যার অনেক লোক নিয়োগ দিয়ে গেছেন। পুলিশের শৃঙ্খলা ফিরলে, সংস্কার হলে হাবিব স্যারদের আর আধিপত্য থাকবে না। কাউকে কাউকে জেলেও যেতে হতে পারে। এই বিষয়গুলো বুঝতে পেরে তারা পরিস্থিতি ঘোলা করার চেষ্টা করছেন। তারা জানেন পুলিশ ঘুরে দাঁড়াতে না পারলে এই সরকারের পক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সম্ভব না। 

আওয়ামী পুলিশের কর্মকর্তাদের ছাত্র-জনতা খুনের জন্য দায়ী করে এক সাব-ইন্সপেক্টর বলছেন, তারা আমাদের গুলি করতে বাধ্য করেছে। এখন ছাত্র জনতা হত্যার বিচার করতে হলে তারা সবার আগে ফাঁসবেন। তাই নিজেদের দায়মুক্তি আদায়ের জন্য তারা পুরো ফোর্সকে উস্কানি দিচ্ছেন। 

সর্বশেষ ৯ আগস্ট কনস্টেবল সোয়াইবুরের নামে যে নির্দেশনাটি পুলিশ সদস্যদের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হয়েছে তা শেয়ার করেন এক পুলিশ সদস্য।  সেখানে বলা হয়েছে-

কেন্দ্রীয় নির্দেশনা উল্লেখ করে জয় যেসব অপপ্রচার করছে সেগুলো হচ্ছে -

১) কর্মবিরতি চলছে, চলবে।

২) কেউ গায়ে ইউনিফর্ম লাগাবেন না।

৩)  নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে লাইনে সিভিল পোষাকে ডিউটি চলবে।

৪) লাইনের বাইরে কেউ ডিউটিতে যাবে না। 

৫) যে যেখানে আছেন, সে সেখানে অবস্থান করবেন।

৬) ঢাকার মধ্যে যারা আছেন, তারা রাজারবাগে উপস্থিত হবেন।

৭) ১১ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত পুলিশের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

৮) ভয়, হুমকি, গড় হাজির একযোগে প্রতিহত করবেন।

নিচে লিখেছে  সোয়াইবুর রহমান জয়, কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি (সমগ্ৰ বাংলাদেশ), রাজারবাগ পুলিশ লাইন, ঢাকা।