ইতালি যেতে চেয়ে শফিকুল যেভাবে লিবিয়ায় ভয়ংকর মানব পাচারকারীদের হাতে জিম্মি হয়েছিল

Shakil
বাংলাবাজার রিপোর্ট
প্রকাশিত: ১১:২১ পূর্বাহ্ন, ০২ নভেম্বর ২০২২ | আপডেট: ১০:০০ পূর্বাহ্ন, ০৬ অগাস্ট ২০২৫
(no caption)
(no caption)

বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে লিবিয়া হতে অপহৃত ভিকটিম উদ্ধারসহ ভয়ংকর মানব পাচার চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা তেজগাঁও-বিভাগ। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের নাম- বাদশা (৩১) ও রাজিব মোল্লা (৩৫)।

গত সোমবার (৩১ অক্টোবর ২০২২ খ্রি.) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা থানা এলাকা হতে তাদেরকে গ্রেফতার করে ডিবি মোহাম্মদপুর জোনাল টিম।

আরও পড়ুন: সাভারে পাচারকালে পিকআপসহ সাড়ে ৬ লাখ টাকার টিসিবি’র পণ্য জব্দ, আটক-১

আজ মঙ্গলবার (১ নভেম্বর ২০২২) সকাল ১১:৩০টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।

তিনি বলেন, ভিকটিম মোঃ সফিকুল ইসলাম ওরফে শফিউল্লা শেখকে বাদশা ইতালি পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে গত অক্টোবর মাসের ৪ তারিখ ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে দুবাই পাঠায়। গ্রেফতারকৃত রাজিবের আত্মীয় সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্রের সদস্য সবুজ দুবাইয়ে অবস্থান করে। সবুজ দুবাই এয়ারপোর্টে ভিকটিমসহ আরো ২০ জনকে রিসিভ করে একটি বাসায় নিয়ে যায়।

আরও পড়ুন: মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে মাদক ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষে ১ নিহত, শতাধিক আহত

তিনি আরো বলেন, পরে ভিকটিমকে দুবাই থেকে সিরিয়া হয়ে লিবিয়ার মিসরাতা শহরের এলাকার একটি ক্যাম্পে নিয়ে যায়। বাদশা ও রাজিবের বোন জামাই সুলতানের নেতৃত্বে ভিকটিমকে আটক রেখে নির্যাতন করেন। ভিকটিমকে নির্যাতন করে মোবাইল ফোনে তার পরিবারকে কান্না শুনিয়ে পাঁচ লক্ষ টাকা দাবী করে।

ডিবি প্রধান বলেন, ভিকটিমের পরিবার নিরুপায় হয়ে গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগে স্মরণাপন্ন হলে যাত্রাবাড়ী থানায় মানব পাচার আইনে একটি মামলা রুজু করা হয়। গোয়েন্দা তেঁজগাও বিভাগ তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্রের দেশীয় বাদশা ও রাজিব মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের মাধ্যমে লিবিয়ায় অবস্থান করা সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্রের অন্যতম সদস্য সুলতানের সাথে যোগাযোগ করে ভিকটিম মোঃ সফিকুল ইসলামকে লিবিয়া হতে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য তিনি বলেন, আন্তঃদেশীয় সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্রের সদস্য বাদশা ও রাজিব ভিকটিমসহ দেশের বেকার যুবক ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকদের ইতালি ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে লিবিয়ায় পাচার করে থাকে। সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্রের বিদেশে অবস্থান করা অন্যান্য সদস্যদের মাধ্যমে ভিকটিমদের অপহরণপূর্বক ক্যাম্পে আটক রেখে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে। নির্যাতন করা ভিকটিমদের পরিবারদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে থাকে।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, অবৈধ পথে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার  প্রলোভন পড়ে কাউকে টাকা না দেয়ার অনুরোধ করেন।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় মানবপাচার আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ গোলাম সবুর, পিপিএম- সেবা এর নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ আনিচ উদ্দীন এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং মোহাম্মদপুর জোনাল টিমের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।