৫০ শতাংশ শুল্কে টালমাটাল

ভারত থেকে মার্কিন কোম্পানিগুলোর পোশাক কেনা স্থগিত

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৭:২৮ অপরাহ্ন, ০৮ অগাস্ট ২০২৫ | আপডেট: ১:২৮ অপরাহ্ন, ০৮ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক ভারতীয় পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের ফলে দেশটির পোশাক শিল্পে বড় ধরনের সংকট দেখা দিয়েছে। এর জেরে অ্যামাজন, ওয়ালমার্ট এবং টার্গেটের মতো বড় বড় মার্কিন খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো ভারত থেকে পোশাকের অর্ডার স্থগিত করেছে। শুক্রবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি একাধিক রপ্তানিকারকের বরাত দিয়ে এই খবর জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের বস্ত্র ও পোশাক শিল্পের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য হলো যুক্তরাষ্ট্র। গত অর্থবছরে (মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত) ভারতের মোট বস্ত্র ও পোশাক রপ্তানির প্রায় ২৮ শতাংশ গেছে যুক্তরাষ্ট্রে, যার আর্থিক মূল্য ৩ হাজার ৬৬১ কোটি ডলারেরও বেশি। তবে ট্রাম্পের নতুন শুল্কারোপের কারণে রপ্তানি খরচ ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে মার্কিন ক্রেতাদের পণ্য অর্ডার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে, যার ফলে ভারতের প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি ডলারের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও পড়ুন: ইউক্রেন নিয়ে আলোচনায় বসছেন ট্রাম্প-পুতিন

রপ্তানিকারকরা জানিয়েছেন, মার্কিন ব্র্যান্ডগুলো তাদের পোশাক ও টেক্সটাইল পণ্যের চালান আপাতত বন্ধ রাখতে বলেছে। উচ্চ শুল্কের বাড়তি খরচ নিজেদের কাঁধে নেওয়ার জন্য তারা ভারতীয় রপ্তানিকারকদের চাপ দিচ্ছে। তামিলনাড়ুর এক রপ্তানিকারক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তার মার্কিন ক্রেতা ৮০ হাজার ডলার মূল্যের টি-শার্ট এবং পোশাকের চালান স্থগিত করতে বলেছেন এবং দাম কমানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন।

কিছু রপ্তানিকারক জানিয়েছেন যে, বড় ধরনের ক্ষতি এড়াতে তারা কিছু ছাড় দেওয়ার কথা ভাবছেন। তবে ভারতের পোশাক প্রস্তুতকারক সমিতির প্রধান পরামর্শদাতা রাহুল মেহতা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, "ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ৫০ শতাংশ শুল্কের ফলে বাংলাদেশ এবং ভিয়েতনামের তুলনায় ভারতীয় পোশাকের দাম ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ বেড়ে যাবে। এতে ক্রেতারা কেন বেশি দামে পণ্য কিনতে চাইবে? এটি অত্যন্ত চাপের পরিস্থিতি।"

আরও পড়ুন: বাণিজ্য আলোচনা নাকচ ট্রাম্পের, রাশিয়া থেকে ভারতের তেল কেনার শাস্তি ৫০ শতাংশ শুল্ক

তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, অতিরিক্ত শুল্কের ফলে কেবল বিদ্যমান চালানই বন্ধ হবে না, বরং ভবিষ্যতে রপ্তানি আদেশেও বড় ধরনের পতন হতে পারে। এর ফলস্বরূপ, অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং লাখ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়ে বেকারত্বের শিকার হতে পারেন।

উল্লেখ্য, গত বুধবার (৬ আগস্ট) এক নির্বাহী আদেশে রাশিয়ার তেল কেনার শাস্তি হিসেবে ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। এর ফলে ভারতের ওপর মোট শুল্কের পরিমাণ আগের ২৫ শতাংশসহ এখন ৫০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে এবং বাকি ২৫ শতাংশ আগামী ২৮ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন আমদানিকারকরা বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মতো বিকল্প দেশের দিকে ঝুঁকতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ভারত।