মৎস্য খাতে বিজ্ঞানীদের অবদান গর্ব করার মতো: উপদেষ্টা ফরিদা আখতার

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার রিপোর্ট
প্রকাশিত: ৭:০৮ অপরাহ্ন, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৭:০৮ অপরাহ্ন, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

মৎস্য খাতে দেশের বিজ্ঞানীদের অবদান গর্ব করার মতো বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেছেন, টেকসই মৎস্যসম্পদ রক্ষায় গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। এজন্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা খাতে বরাদ্দ আরও বাড়াতে হবে।

শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের উদ্যোগে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী তৃতীয় ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ফর সাসটেইনেবল ফিশারিজ (আইসিএসএফ)-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আরও পড়ুন: এই ঘৃণ্য কাজে জড়িতদের বিচারে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়

উপদেষ্টা বলেন, “অতিরিক্ত মাছ শিকার, চায়না জাল বা ট্রল ডোর ব্যবহার অত্যন্ত দুঃখজনক। যারা এভাবে সাময়িক লাভের জন্য মাছ শিকার করছে, তারা প্রকৃত মৎস্যজীবী নয়। এতে মাছের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।” এ বিষয়ে মৎস্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটকে সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

শীতকালে কৃষিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার নিয়ে তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমে তা পানিতে মিশে মাছের ক্ষতি করছে। এ সমস্যা সমাধানে কৃষিখাতে বালাইনাশক ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা আরোপে ইতোমধ্যে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: আমরা কি জুলাই আন্দোলনে ললিপপ খাচ্ছিলাম: রিজভী

ইলিশের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এ বছর ইলিশ আহরণ কমে যাওয়ায় বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তন, দূষণ ও নদীর নাব্যতা হ্রাসসহ নানা কারণে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে সাধারণ মানুষের নাগালে ইলিশ পৌঁছাতে সরকার কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে মিঠাপানির মাছ চাষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু প্রাপ্যতা নয়, মাছের নিরাপত্তা ও মান নিয়েও নজর দিতে হবে। মাছের বৈচিত্র্য রক্ষা ও প্রজননক্ষেত্র সংরক্ষণে জোর দিতে হবে।”

হাওড়ের উন্নয়ন প্রসঙ্গে ফরিদা আখতার বলেন, “অপরিকল্পিত সড়ক ও স্থাপনা নির্মাণ করে হাওড়ের পরিবেশ ধ্বংস করা যাবে না। হাওড় গবেষণা ইনস্টিটিউট ও মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটকে সমন্বয় করে টেকসই পরিকল্পনা নিতে হবে।”

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র, পূবালী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ আলী, সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিকৃবির কোষাধ্যক্ষ ড. এটিএম মাহবুব-ই-এলাহি এবং কোয়ালিটি ফিডস লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম কায়সার রহমান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নির্মল চন্দ্র রায়। সম্মেলনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন সিকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম। তিনি গবেষণায় আরও সুযোগ-সুবিধা প্রদানের আহ্বান জানান।

তিন দিনব্যাপী এ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ১১টি সেশনে দেশি-বিদেশি প্রায় আড়াই শতাধিক বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে। কনফারেন্সে বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল ওয়াহাব মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।