বাংলাদেশে নির্বাচন বিলম্বিত হলে রাজপথে অস্থিরতার আশঙ্কা: মাইকেল কুগেলম্যান

বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নির্ধারিত সময় ফেব্রুয়ারিতে না হলে রাজপথে বিক্ষোভ এবং তা থেকে সহিংস অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সাময়িকী ফরেন পলিসি-এর সাউথ এশিয়া ব্রিফ-এ তিনি এই মন্তব্য করেন।
কুগেলম্যান ফরেন পলিসি-এর সাপ্তাহিক এই ব্রিফের নিয়মিত লেখক। তিনি জানান, সম্প্রতি ঢাকায় অবস্থানকালে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা এবং পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতেই এ মূল্যায়ন দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: এই ঘৃণ্য কাজে জড়িতদের বিচারে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা জানালেও কুগেলম্যান মনে করেন, নানা রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চাপের কারণে এখনো অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।
তিনি বলেন, যদি নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন না হয়, তাহলে রাজপথে বিক্ষোভ এবং তা থেকে বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। তার মতে, বর্তমান রাজনৈতিক ও সামাজিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে নির্বাচন বিলম্বিত হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: আমরা কি জুলাই আন্দোলনে ললিপপ খাচ্ছিলাম: রিজভী
ফরেন পলিসির বিশ্লেষণে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার চলছে, যার এক বছর পূর্ণ হয়েছে গত মাসে। অর্থনৈতিক চাপ, মূল্যস্ফীতি এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জনগণের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। এর ফলে সরকার ও প্রশাসনের ওপর চাপ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঢাকায় অবস্থানকালে কুগেলম্যান যেসব রাজনৈতিক বিশ্লেষক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও সরকারি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছেন, তাঁদের অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে কিছু প্রভাবশালী মহল নির্বাচন বিলম্বিত করতে চাইছে। এদের মধ্যে রয়েছে গত বছরের ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে গঠিত নতুন রাজনৈতিক দল এবং সরকারের অভ্যন্তরের কিছু অংশ।
তবে তার মতে, সেনাবাহিনী, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন নির্বাচন আয়োজনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে মনে হচ্ছে। তাঁরা সময়মতো নির্বাচনের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছেন।
তবে এ প্রতিশ্রুতি টেকসই হবে কি না, সেটি নির্ভর করবে আসন্ন সপ্তাহগুলোতে রাজনৈতিক পরিবেশ কতটা স্থিতিশীল থাকে তার ওপর।