তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে তামাক কোম্পানি স্টেকহোল্ডার হতে পারবে না: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, তামাক কোম্পানি কোনোভাবেই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের স্টেকহোল্ডার হতে পারবে না। সরকারও জনস্বার্থবিরোধী এমন কোনো কাজে কোনো অবস্থাতেই যুক্ত হবে না। তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষের সুস্থতার কথা সত্যিকার অর্থে ভাবতে চাইলে তামাক বন্ধ করতেই হবে।
উপদেষ্টা আজ বিকেলে সিরডাপ মিলনায়তনে ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুওর (ডর্প) আয়োজিত “জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাশ” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে ১৭টি মানিলন্ডারিং মামলার অভিযোগপত্র দাখিল শিগগিরই
‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়া পরিমার্জনের প্রসঙ্গে ফরিদা আখতার বলেন, দেশে বিদ্যমান ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫’ পরবর্তীতে ২০১৩ সালে সংশোধিত হলেও কার্যকর নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ প্রণয়ন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জনসমাগমস্থল সম্পূর্ণভাবে ধূমপানমুক্ত করা জরুরি এবং ধূমপানের জন্য আলাদা স্থান নির্ধারণের কোনো সুযোগ রাখা যাবে না।
উপদেষ্টা বলেন, তামাক কোম্পানির নানা অপকৌশলের কারণে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে দীর্ঘদিন বিলম্ব হয়েছে। “তামাক কোম্পানি যতই শক্তিশালী হোক না কেন, তাদের কোনো নৈতিক মনোবল নেই। ফলে তারা যতই চেষ্টা করুক না কেন, সফল হতে পারবে না।”
আরও পড়ুন: আগামী বছর ঈদুল ফিতরের ছুটি যতদিন
ই-সিগারেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার শুরু থেকেই এর আমদানি নিষিদ্ধ করার বিষয়ে একমত হয়েছে। একইসঙ্গে তামাক পণ্যের ক্ষতিকর দিক প্যাকেটের দৃশ্যমান স্থানে প্রকাশ করতে হবে। পরোক্ষ ধূমপানও ধূমপান সেবনের মতোই ক্ষতিকর।
তিনি তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আপনারা যদি সচেতন থাকেন, তবে শুধু নিজেরাই ধূমপান থেকে বিরত থাকবেন না, বরং অন্যদেরও এ অভ্যাস থেকে বিরত রাখতে পারবেন। কেবল আইন করলেই হবে না, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে তরুণদের সক্রিয় হতে হবে।”
সভায় ডব্লিউএইচও ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোবাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)-এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রণীত খসড়ার সংশোধনীগুলোর মধ্যে ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবগুলো হলো— পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বা স্মোকিং জোন নিষিদ্ধ করা, সকল ধরনের তামাকজাত পণ্যের প্রদর্শন ও বিজ্ঞাপন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে তরুণদের রক্ষা করা, বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি বন্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি বা সিএসআর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা এবং তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কের সচিত্র সতর্কবার্তা বৃদ্ধি করে শতকরা ৯০ ভাগ করা।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সদস্য সাবেক সচিব মুন্সী আলাউদ্দীন আল আজাদ, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মহাপরিচালক মো. আখতারউজ-জামান, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, তামাক বিরোধী যুব প্রতিনিধি আয়েশা আকতার শিল্পী এবং নাইমুর রহমান ইমন।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন ডর্প’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী এএইচএম নোমান এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডর্প’র প্রকল্প সমন্বয়কারী জেবা আফরোজা।





