পরিসংখ্যানবিদরা স্বাস্থ্য বিভাগের ডিজিটাল সৈনিক, অথচ পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার রিপোর্ট
প্রকাশিত: ৭:০০ অপরাহ্ন, ২১ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ৭:০০ অপরাহ্ন, ২১ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যানবিদরা দীর্ঘদিন ধরে দেশের স্বাস্থ্য তথ্য ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। তারা স্বাস্থ্য তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ ও প্রতিবেদন তৈরির মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতের ডিজিটাল রূপান্তরে অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন। তবুও, এই “ডিজিটাল সৈনিকরা” বছরের পর বছর ধরে ন্যায্য পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্বাস্থ্য খাতের ডিজিটাল মেরুদণ্ড:

আরও পড়ুন: সিভিল এভিয়েশন একাডেমিতে ‘এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ম্যানেজারস কোর্স’ সমাপ্ত

স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যানবিদরা প্রতিদিন দেশের প্রতিটি উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায় থেকে স্বাস্থ্য তথ্য সংগ্রহ করে সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে প্রতিবেদন পাঠান। এসব তথ্যের ভিত্তিতেই সরকার স্বাস্থ্যনীতি ও উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করে থাকে।

বিশেষত, কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন সময়ে পরিসংখ্যানবিদরা মাঠপর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তারা ঝুঁকি উপেক্ষা করে দিনরাত কাজ করেছেন, যাতে স্বাস্থ্য তথ্য সঠিকভাবে সংরক্ষিত ও উপস্থাপিত হয়।

আরও পড়ুন: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানালেন ভারতের সঙ্গে শুধুমাত্র একটি চুক্তি বাতিল হয়েছে

পদোন্নতি না পেয়ে হতাশ কর্মীরা:

অবদান থাকা সত্ত্বেও বহু পরিসংখ্যানবিদ বছরের পর বছর ধরে পদোন্নতি পাননি। ২০২৩ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পদোন্নতির অনুমোদন মিললেও এখনো কার্যকর হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এই অবস্থায় কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। অনেকেই বলছেন, প্রশাসনিক জটিলতা ও অবহেলার কারণে তাদের কর্মদক্ষতা এবং মনোবল ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।

একজন পরিসংখ্যানবিদ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমরা দেশকে তথ্য দিয়ে শক্তিশালী করছি, অথচ আমাদের ক্যারিয়ার অচল হয়ে আছে। পদোন্নতি না পেয়ে আমরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি।”

পরিসংখ্যানবিদদের দাবিসমূহ:

১. অবিলম্বে পদোন্নতি কার্যকর করা এবং দীর্ঘদিন বঞ্চিতদের ন্যায্য মর্যাদা দেওয়া।

২. স্বাস্থ্য বিভাগের পদোন্নতি নীতিমালা হালনাগাদ ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

৩. পরিসংখ্যান ক্যাডার গঠন করে তাদের জন্য নির্দিষ্ট কাঠামো বাস্তবায়ন।

৪. যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পদোন্নতি প্রদান, রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক প্রভাবমুক্তভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া।

স্বাস্থ্য বিভাগের ভূমিকা ও প্রত্যাশা:

স্বাস্থ্য বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পদোন্নতির প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে আলোচনা চলছে। তবে কবে নাগাদ তা কার্যকর হবে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সময়সীমা এখনো জানা যায়নি।

এদিকে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পরিসংখ্যানবিদদের অবদানকে যথাযথ মূল্যায়ন করলে স্বাস্থ্য খাত আরও উন্নত ও দক্ষ হবে।

তাদের মতে, এই কর্মকর্তারাই দেশের স্বাস্থ্য তথ্য ব্যবস্থার মেরুদণ্ড—তাদের অনুপ্রেরণা ও স্বীকৃতি জাতীয় স্বার্থেই জরুরি।