বাংলাদেশে ভূমিকম্পের ঝুকিমুক্ত জেলা কোনগুলো

Sadek Ali
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৪:১৪ অপরাহ্ন, ২২ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৪:১৪ অপরাহ্ন, ২২ নভেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকার আশুলিয়ার বাইপাইলে ভূকম্পন রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র। নরসিংদীর মাধবদীতে সংঘটিত শক্তিশালী ভূমিকম্পের ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই আবারও কম্পন অনুভূত হয়েছে। শনিবার সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে নরসিংদীর পলাশ এলাকায় এ মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৩।

ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুবায়েত কবির জানান, আজকের এ কম্পনটি শুক্রবার সকালের ভূমিকম্পের আফটারশক। তিনি বলেন, “গতকালের বড় কম্পনের পর এ ধরনের ছোট কম্পন স্বাভাবিক।”

আরও পড়ুন: যারা ধর্ম ও মুক্তিযুদ্ধকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে তাদের কাছে দেশ নিরাপদ নয় : সালাম আজাদ

বাংলাদেশকে ভূমিকম্প ঝুঁকির ভিত্তিতে তিনটি জোনে ভাগ করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর মধ্যে জোন–১ সবচেয়ে উচ্চঝুঁকিপূর্ণ, জোন–২ মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ এবং জোন–৩ নিম্ন ঝুঁকিপ্রবণ। প্রকাশিত মানচিত্র অনুযায়ী, দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের উল্লেখযোগ্য অংশ জোন–১ হিসেবে চিহ্নিত।

বিশেষ করে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের ৯ জেলা, ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল, গাজীপুর, নরসিংদীর কিছু অংশ, কিশোরগঞ্জের পুরো জেলা, কুমিল্লা বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির বড় অংশই উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে। অপরদিকে খুলনা, যশোর, বরিশাল ও পটুয়াখালী জোন–৩-এ হওয়ায় তুলনামূলকভাবে কম ঝুঁকিপূর্ণ।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশে পাটভিত্তিক উৎপাদনে বড় বিনিয়োগে আগ্রহী চীন

পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৭৬ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে অন্তত পাঁচ দফা বড় ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে, যার প্রায় সবগুলোর উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেট, মৌলভীবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবান ও কক্সবাজার অঞ্চলে। ফলে ভবিষ্যতেও এসব এলাকায় বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়ে গেছে।

বাংলাদেশের চারপাশে পাঁচটি প্রধান ভূমিকম্প উৎপত্তিস্থল (ফল্ট লাইন) চিহ্নিত রয়েছে। এর মধ্যে প্লেট বাউন্ডারি-১ মিয়ানমার থেকে নোয়াখালী পর্যন্ত, প্লেট বাউন্ডারি-২ নোয়াখালী থেকে সিলেট এবং প্লেট বাউন্ডারি-৩ সিলেট থেকে ভারতের অভ্যন্তরে পর্যন্ত বিস্তৃত। পাশাপাশি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে ডাউকি ফল্ট এবং মধ্যবাংলায় মধুপুর ফল্ট অবস্থান করছে, যেগুলোও ভূমিকম্পের গুরুত্বপূর্ণ উৎস।

আশুলিয়ায় নতুন এ কম্পন রেকর্ড হওয়ার পর স্থানীয়দের মাঝে আবারও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকার মতো অঞ্চলে ভবন নির্মাণে নিয়ম না মানা বড় ঝুঁকি তৈরি করছে।