এক আসনে একাধিক প্রার্থী দিতে পারবে রাজনৈতিক দল
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি নির্বাচনি এলাকায় নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল একাধিক প্রার্থীকে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন দিতে পারবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দলের চূড়ান্ত প্রার্থী নির্ধারণ করে রিটার্নিং অফিসারকে লিখিতভাবে জানাতে হবে।
ইসির জারি করা পরিপত্র অনুযায়ী, আগামী ২০ জানুয়ারি বিকাল ৫টার মধ্যে দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে চূড়ান্ত প্রার্থীর নাম জানাতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নাম জানানো হলে অন্য মনোনীতদের প্রার্থিতা স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্থগিত বলে গণ্য হবে।
আরও পড়ুন: হাদির গুলির মতো ঘটনা আরও ঘটার আশঙ্কা মির্জা ফখরুলের
ইসি সচিবালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন স্বাক্ষরিত এ পরিপত্রে মনোনয়নপত্র দাখিল, গ্রহণ, বাছাই, প্রার্থিতা প্রত্যাহার, জামানত, আপিল ও প্রতীক বরাদ্দসহ নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের ক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়ই দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত প্রত্যয়নপত্র দাখিল করতে হবে।
ইসির জারি করা পরিপত্রে দেখা গেছে, কোনো প্রার্থীকে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকায় প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ ভোট পেতে হবে। অন্যথায় জামানত বাবদ জমা দেওয়া ৫০ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় প্রার্থীকে ৫০ হাজার টাকা জামানত জমা দিতে হবে। এ অর্থ নগদ, ব্যাংক ড্রাফট, পে-অর্ডার বা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে ইসির অনুকূলে জমা দেওয়া যাবে। একই নির্বাচনি এলাকায় একাধিক মনোনয়নপত্র দিলে একটি জামানতই যথেষ্ট হবে। অন্য মনোনয়নপত্রের সঙ্গে চালানের সত্যায়িত অনুলিপি দিতে হবে। জামানতের বাইরে কোনো অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ বা প্রদান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। জামানতের অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংক, যে কোনো ব্যাংক বা সরকারি ট্রেজারি বা সাব ট্রেজারিতে ১০৯০৩০২১০১৪৪৩-৮১১৩৫০১ কোড নম্বরে জমা দিতে হবে। নগদে প্রাপ্ত জামানতের অর্থ রিটার্নিং বা সহকারী রিটার্নিং অফিসার সরকারি খাতে জমা দেবেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচন বানচালে সক্রিয় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা
মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। শেষ দিন ২৯ ডিসেম্বর বিকাল ৫টার পর আর কোনো মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হবে না। প্রার্থী ছাড়াও প্রস্তাবকারী বা সমর্থনকারী মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন।
মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় ছোটখাটো ত্রুটির কারণে তা বাতিল করা যাবে না বলেও পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। ত্রুটি সঙ্গে সঙ্গে সংশোধনের সুযোগ দিতে হবে। তবে হলফনামার কোনো তথ্য পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে না।
মনোনয়নপত্র বাতিল বা গ্রহণ নিয়ে অসন্তুষ্ট প্রার্থীরা ৫ জানুয়ারি থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবেন। এসব আপিল নিষ্পত্তি করা হবে ১২ থেকে ১৮ জানুয়ারির মধ্যে।
এদিকে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম নির্বিঘ্ন করতে সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিনেও নির্বাচন অফিসগুলো খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে ইসি। প্রয়োজনে অফিস সময়ের পরেও কার্যক্রম চালু রাখতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া মনোনয়নপত্র দাখিলকারীদের ঋণখেলাপি তথ্য যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবিতে তথ্য পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের আচরণবিধি অনুযায়ী অঙ্গীকারনামা জমা দেওয়াও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের নিরাপত্তা জোরদার
এদিকে তফসিল ঘোষণার পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার, চার কমিশনার ও ইসি সচিবের সার্বিক নিরাপত্তা জোরদারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ লক্ষ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে অতিরিক্ত পুলিশি নিরাপত্তা (এসকর্ট) চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
সহিংস ঘটনার পর সতর্ক ইসি
ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করার চেষ্টা এবং লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইসি। কমিশন জানিয়েছে, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাগুলো তদন্তাধীন রয়েছে।





