মুন্সীগঞ্জে মাইকে ঘোষণা দিয়ে যুবককে হত্যা

Any Akter
মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ
প্রকাশিত: ৩:০৩ অপরাহ্ন, ০২ মে ২০২৫ | আপডেট: ৮:১৭ অপরাহ্ন, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মাকহাটি এলাকা হতে শটগান ও দুই রাউন্ড কার্তুজসহ যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১ মে) রাত ২ টার দিকে সদর উপজেলার মাকহাটি তালতলা রাস্তার উপর হতে ওই লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত সানা মাঝি (৪২) সদর উপজেলার মাকহাটি গ্রামের মৃত মোহাম্মদ মাঝির ছেলে।

আরও পড়ুন: শিল্প কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত, জনজীবন বিপর্যস্ত, লোকসানের মুখে ব্যবসায়ীরা

স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৯৯৭ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সানা মাঝির পরিবারের সঙ্গে তার চাচাতো ভাই বাবু মাঝিদের বিরোধ শুরু হয়। ওই সময় বাবু মাঝির ভাই শিপন মাঝির গুলিতে নিহত হন সানার বাবা মোহাম্মদ মাঝি। এরপরের বছর শিপনকে হত্যা মামলায় সানা ও তাঁর চার ভাই দীর্ঘদিন জেল খাটেন। ২০১৬ সালে তাঁরা কারামুক্ত হয়ে গ্রামে ফেরেন। পরে দুই পক্ষ মীমাংসা করলেও বাবু পক্ষের মধ্যে ক্ষোভ রয়ে যায়।

নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই আসাদ মাঝি বলেন, স্বাধীন নামের এক ব্যক্তি কাজের কথা বলে বৃহস্পতিবার সানাকে ডেকে নিয়ে যায়। রাতেই জানতে পারেন, সানাকে বাবু মাঝির বাড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। বাবু মাঝি, আলামিন, কাউসার, হিরণ, মুন্নাসহ অনেকেই নির্যাতন করেছেন। আমরা খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে দেখি, বাবুদের বাড়ির পাশে মাকাহাটি রাস্তার ওপরে ভাই সানা মাঝিকে মেরে ফেলে রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন: জিম্মি করে মুক্তিপন আদয়ের অভিযোগে বিএনপি নেতাসহ আটক ৫

নিহতের স্ত্রী ফাতেমা বেগম বলেন, আমার ৮ বছর ও ৪ বছর বয়সী দুইটা মেয়ে, ৮ মাসের একটি ছেলে আছে। আমার স্বামীর প্রতি ওদের এত আক্রোশ জানলে আমি আমার স্বামীকে ঘর থেকে বের হতে দিতাম না। ওরা আমার স্বামীকে নির্দয়ের মতো কুপিয়ে ও পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। আমি হত্যাকারীদের বিচার চাই।

রাত ৯ টার দিকে মাকোহাটি গ্রামের বাবু মাঝির বাড়িতে ডাকাতি হচ্ছে মর্মে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজন জড়ো করে নিহতকে গণপিটুনী দিয়ে মেরে মধ্য মাকোহাটি তালগাছতলা রাস্তার উপর ফেলে রেখে যায় দূর্বত্তরা। এ সময় শরীরের সাথেই একনালা একটি শর্টগান ও দুই রাউন্ড কার্তুজ বেঁধে রাখে হত্যাকারীরা।

খবর পেয়ে নিহতকে সেখান হতে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ  জেনারেল হাসপাতাল নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই হবু মাঝি বাদি হয়ে সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। এটি মূলত দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধের কারনে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। পূর্ব বিরোধের জের ধরে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩ টার দিকে নিহতে পরিচিত স্বাধীন নামের ছেলে তাকে ডেকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। পরে রাত ৯টা হতে ১০ টার মধ্যে নিহতকে মেরে এলাকার মাইকে ডাকাত ডাকাত বলে ঘোষনা দিয়ে নিহতের মরদেহ রাস্তার উপর ফেলে যায়। নিহতকে যারা খুন করেছে তারাই তার মরদেহের সাথে অস্ত্র ও কর্তুজ রেখে গেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম সাইফুল আলম বলেন, ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক রয়েছে। তবে আমরা আমাদের পুলিশিং কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। আসামি গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নিহতের ভাই হবু মাঝি আমাদের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা প্রক্রিয়া দিন রয়েছে।