চার মাস ধরে বন্ধ বেতন

কর্মী সংকটে বন্ধ হয়ে যেতে পারে কুমিল্লা সরকারি হাসপাতালের আইসিইউ সেবা

Sadek Ali
মো. মাসুদ রানা, কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১২:০২ অপরাহ্ন, ০৮ মে ২০২৫ | আপডেট: ২:২০ পূর্বাহ্ন, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

এভাবে নিয়মিত ও হাওলাত চিকিৎসক দিয়ে চালানো হচ্ছে আইসিইউ। এছাড়া নার্স, ওয়ার্ড বয় ও আয়া আছেন। তারা আবার প্রকল্পের আওতায়। এমন কর্মচারী রয়েছেন সারা দেশে ১ হাজার ৪ জন। তাদের সবার বেতনও চার মাস ধরে বন্ধ। 

তিনি জানান, একই সাথে ১০ শয্যার এইচডিইউ (হাই ডিপেনডেনসি ইউনিট)তেও চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন এই তিন চিকিৎসক। প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেলে তাদের চাকরি চলে যাবে। আইসিওতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকবে না। ওই দুইজন হয়তো থাকবে না। এতে বন্ধ হয়ে যেতে পারে আইসিইউ। 

আরও পড়ুন: নাসিরনগরে আন্তর্জাতিক যুব দিবস পালিত

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের সাবেক একজন অধ্যক্ষ নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কুমিল্লার মতো একটি মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকসহ লোকবল সংকটে আইসিইউর মতো জরুরি সেবা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, তা ভাবতেই অবাক লাগছে। অবশ্য তার আগে ৫শ’ শয্যার এ হাসপাতালে আইসিইউ ছিলই না। আরেকটি ১০ শয্যার ইউনিট খোলার উদ্যোগ সেই সময় নেওয়া হলেও তা চালু করা যায় নি। এতে নষ্ট হচ্ছে দামী কোটি কোটি টাকা মূল্যের যন্ত্রপাতি। কারণ আওয়ামী লীগ আমলে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর মালিকরা চায় নি সরকারী হাসপাতালে আইসিইউ চালু হোক। তারা আবার চিকিৎসক ও চিকিৎসক সংগঠনের বড় নেতাও ছিলেন।

ডাঃ মঈন উদ্দীন আরও বলেন, প্রথমে ইউএনএফপিএ পরে ইআরপিপি(ইমারজেন্সি পেনডামিক প্রিপেয়ারনেস) প্রকল্পের আওতায় করোনাকাল থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত তাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। এখন প্রকল্প শেষ হওয়ার আগেই তহবিল নেই এই অজুহাতে বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে চিকিৎসক, নার্স, আয়া এবং ওয়ার্ড বয় সবাই হতাশায় ভূগছেন। তার মতে অসহায় রোগী ও স্বজনদের চিকিৎসা পাওয়ার আর্তনাদ দেখলে কষ্ট লাগে।আইসিইউর একটি খালি শয্যার জন্যে রোগীর অপেক্ষা ও তদ্বির কি পরিমানে রয়েছে তা শুধু ভুক্তভোগীরাই ভালো জানেন।

আরও পড়ুন: সাভারে পাচারকালে পিকআপসহ সাড়ে ৬ লাখ টাকার টিসিবি’র পণ্য জব্দ, আটক-১

কুমিল্লা সদর হাসপাতালের ডাঃ আবদুল মোক্তাদির আরও জানান, করোনাকাল ২০২০ সালের জুন মাসে তাদের নিয়োগ ও যোগদান। পরে একবছর প্রকল্প বাড়লো। এরপর আরও একবছর। এরপর শুরু হলো ৬ মাস করে বাড়ানো। এভাবে আজ পর্যন্ত পৌঁছা। বলা হচ্ছে প্রকল্প শেষ হয়ে গেছে ডিসেম্বরে। জুন পর্যন্ত চলবে বেতন প্রকল্প থেকে নয় আউটসোর্সিং থেকে সরকারি নিয়মে চালিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু এখন বন্ধ হয়ে রয়েছে। তাই চিকিৎসক কর্মচারীরা আন্দোলন করছেন।

তিনি বলেন, এভাবে চাকরি হয় না। আমাদের ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। কর্মচারীরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তারা কাজে মনোযোগ হারাতে শুরু করেছেন। এ অবস্থায় আইসিইউ ইউনিট চালু রাখা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। 

কুমিল্লা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন ডাঃ আলী নূর বশির বাংলাবাজার পত্রিকাকে বলেন, এটি উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত। প্রকল্প ডিসেম্বর থেকে বন্ধ, তবে জুন পর্যন্ত চলবে আশাবাদী আমরা। এরপর কুমেক হাসপাতাল ও কুমিল্লা সদর হাসপাতালের আইসিইউ কিভাবে চলবে তা মন্ত্রনালয় সিদ্ধান্ত নিয়ে জানাবেন। বন্ধ হয়ে যাক আমরা কেউই চাই না। 

সচেতন নাগরিক কমিটি কুমিল্লার সাবেক সভাপতি শাহ মোঃ আলমগীর খান বলেন, কুমিল্লায় সরকারি বড় দু’টি হাসপাতাল কুমেক ও সদর হাসপাতালে আইসিইউ ছিল না। করোনার শেষ সময়ে প্রকল্পের অধীন চালু হয়। এর চাহিদা রয়েছে, প্রয়োজন। প্রকল্প শেষ হলেও আইসিইউ সেবা চালু রাখার দাবী জানাচ্ছি।