প্রবাসে স্বামীর আত্মহত্যা, রাজবাড়ীতে সিঙ্গারা ও চা বিক্রি করে চলছে স্ত্রীর সংসার

রাজবাড়ী সদর উপজেলার শহীদওহাবপুর ইউনিয়নের আহলাদীপুর গ্রামে মোসাম্মৎ রাশেদা বেগম ও ইলিয়াস পাটোয়ারীর তিন সন্তানসহ অভাবের সংসার।
সংসারের অভাব কাটিয়ে উঠতে ধারদেনা করে দালালের খপ্পরে পড়ে সৌদি আরব যান ইলিয়াস পাটোয়ারী (৩৫)। সেখানে গিয়ে তিনি ভাল কাজ পান না। মরুভূমিতে ছাগল চরানোর কাজ পেয়েছিলেন। দেশে ধার দেনার চাপ ওদিকে তিনি কাজের বেতন পাচ্ছিলেন না। সংসার খরচ তো রয়েছে। এসব চাপ তিনি সামলাতে না পেরে সৌদি আরবে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেন ইলিয়াস পাটোয়ারী।
আরও পড়ুন: নাসিরনগরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত
এদিকে টাকার অভাবে স্বামীর মরদেহ আনতে পারেননি স্ত্রী রাশেদা বেগম।
বুধবার সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, বিধবা নারী রাসেদা বেগম ৩ সন্তানের জননী তার বড় মেয়ে বৈশাখী আক্তার এইচএসসি ব্যাচের প্রথম বর্ষের ছাত্রী, ছেলে মোস্তাকিন পাটোয়ারী মাদ্রাসায় হাফেজী পড়ছে, ছোট কন্যা মারিয়া আক্তার পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ছে।
আরও পড়ুন: শরীয়তপুরে নির্যাতিত শিশুর পাশে তারেক রহমান
অভাবের সংসারে স্বামী ইলিয়াস পাটোয়ারী গত ২০২৪ সালে নভেম্বর মাসের ১৩ তারিখে সৌদি আরবে গিয়েছিলো কাজের জন্য। সেখানে গিয়ে মরুভূমিতে ছাগল দেখাশোনার কাজ পেয়েছিল। কিন্তু এ কাজ তার দ্বারা হচ্ছিল না। এদিকে ভালো বেতন সে পাচ্ছিল না বাড়িতেও টাকা পাঠানো তার জন্য কষ্ট হয়ে উঠেছিল। সব জ্বালা যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে। তিনি ওখানে আত্মহত্যা করেন। অর্থাৎ গলায় ফাঁস দিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। বাড়িতে এত অভাব স্বামীর লাশ আনতে পারিনি টাকার অভাবে।
এই কথা জানাজানি হওয়ার পর এলাকার লোকজন সাহায্য সহযোগিতা করে ছোট্ট একটি দোকান দিয়ে দেন গ্রামের রাস্তার উপর। ছোট্ট দোকানে সিঙ্গারা ও চা বিক্রি করে চলছে অভাবী রাশেদার সংসার।
তিন সন্তানের জননী রাশেদা বেগম জানান, সন্তানের পড়ালেখার খরচ আর চালাতে পারি না। কতদিন ভালো একটা মাছ দিয়ে ভাত খাই না। খুব কষ্টে আছি ভাই। স্বামীকে শেষ দেখা দেখতে পারলাম না। স্বামীর লাস দেশে এনে মাটি দিতে পারলাম না।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারিয়া হক জানান, রাশেদা বেগম এর জীবনটা অনেক কষ্টের। সে যদি আমাদের উপজেলা বরাবর দরখাস্ত করেন আমরা উপজেলার পক্ষ থেকে তার পাশে থাকবো।