ঢাকার সমাবেশ থেকে জুলাই সনদ আদায় করে নেওয়া হবে: সিলেটে নাহিদ

- জাতীয় মুক্তির লড়াইয়ে সিলেট বরাবরই অগ্রগামী
- সিলেটিরা লন্ডনকে জয় করেছে, বাংলাদেশকেও জয় করেছে
- এনসিপি চাঁদাবাজ টেন্ডারবাজের দল নয়, ফ্যাসিবাদ উপড়ে এনসিপি উঠে এসেছে- সিলেটে নাহিদ
আগামী ৩ আগস্ট রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মহাসমাবেশ থেকে জুলাই সনদ আদায় করে নেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, সিলেটবাসী আপনারা ৩ আগস্টের এনসিপির মহাসমাবেশে যোগদান করবেন, সেই সমাবেশ থেকে জুলাই সনদ আদায় করে নেওয়া হবে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে নগরীর চৌহাট্টাস্থ সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই পদযাত্রা শেষে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাতিলের দাবিতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে মানববন্ধন
নাহিদ ইসলাম বলেন, এদেশের জনগণের মুক্তির লড়াইয়ে ছিল সিলেট ছিল সবসময় অগ্রগামী। জুলাই আন্দোলনেও সিলেটবাসী সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করেছে। তিনি বলেন, সিলেটিরা লন্ডনকে জয় করেছে, বাংলাদেশকেও জয় করেছে, লন্ডনে যারা গায়ের ঘাম ঝরে রেমিট্যান্স পাঠায়, সেই প্রবাসীদের ভোটাধিকার অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, তেল গ্যাসে সমৃদ্ধ এই সিলেট সম্পদে ভরপুর। এনসিপি ক্ষমতায় গেলে সিলেটে শিল্পকারখানা গড়ে তোলা হবে। আগামীতে সিলেট এনসিপির দূর্গ হবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ফের ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম রবি শিক্ষার্থীদের
এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, এনসিপি চাঁদাবাজ টেন্ডারবাজের দল নয়, ফ্যাসিবাদ উপড়ে এনসিপি উঠে এসেছে। পরবর্তী বাংলাদেশ হবে এনসিপির। তিনি বলেন, এতদিন আমাদের দেশ ছিল ধনিক শ্রেণির। বসুন্ধরার মতো অলিগার্ক শ্রেণি গড়ে উঠেছিল। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সুবিধা নিয়ে তারা মিডিয়া খুলেছে, তাদের ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। তিনি বলেন, লীগের একটি পক্ষ এক্টিজম করেছে, তারা বিভিন্ন রূপে ফিরতে চায়। তাদের ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। মুজিববাদের পাহারাদার হয়ে দাড়িয়েছে, তারা কথায় কথায় বাংলা ছাড়তে বলে। এইসব চাঁদাবাজদের দেশ ছাড়তে হবে।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সিলেটিরা প্রবাসে গিয়ে রক্তের উপর দাঁড়িয়ে রেমিট্যান্স পাঠায়, তাদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা যাবে না। তিনি বলেন, অনেকে বলেন এনসিপি
বিএনপির বিরোধী,খালেদা জিয়ার বিরোধী, জিয়ার বিরোধী, আমরা তাদের বিরোধী নই, তবে আমরা বলি, আমরা বাংলাদেশে চাঁদাবাজদের বিরোধী। এনসিপি থাকলে চাঁদাবাজ সন্ত্রাস ও সিন্ডিকেটের টাই হবে না।
এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের সঞ্চালনায় ও সিলেট জেলার প্রধান সমন্বয়ক নাজিম উদ্দীন শাহানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, অর্পিতা শ্যামা দেব, আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিভা, কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক এহতেশামুল হক, নেতা আবু বাকের মজুমদার, জাতীয় যুব শক্তির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুর রহমান, কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যারিস্টার নুরুল হুদা জুনেদ, সিলেট মহানগরের প্রধান সমন্বয়কারী আবু সাদেক মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম চৌধুরী, সিলেটের যুগ্ম সমন্বয়কারী আবু সাইদ ও জাতীয় যুব শক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক মাহবুবুর রহমান তাসলীম প্রমুখ।
এর আগে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে জুলাই পদযাত্রা নগরীর চৌহাট্টা পয়েন্ট থেকে রিকাবীবাজার হয়ে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। পদযাত্রায় জেলার যুগ্ম সমন্বয়কারী ফয়সাল আহমদ, জেলা এনসিপি নেত্রী আয়শা সিদ্দিকা প্রিয়া ও মহানগর এনসিপি নেত্রী মোফসেনা ত্বাকিয়াসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।
# শাবিপ্রবির গেইট সমাবেশে নাহিদ
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আমরা এতোদিন গোলামের জীবন যাপন করতাম। বিশেষত হলগুলোতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের শিকার হতে হতো। তবে জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে শহীদদের মাধ্যমে আমরা শপথ নিয়েছি- আমরা আর গোলামের জীবনযাপন করবো না।
শুক্রবার বিকেলে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের সামনে সংক্ষিপ্ত পথসভায় নাহিদ ইসলাম এমনটি বলেন।
শুক্রবার বিকেলে জুলাই পদযাত্রা নিয়ে সিলেট আসে এনসিপি। সুনামগঞ্জ থেকে সিলেট শহরে আসার পথে শবিপ্রবি গেইটে পথসভা করেন নাহিদ ইসলামরা।
এতে নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের নির্বাচন দ্রুত ব্যবস্থা করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় গল্পগুলো ঠিকমতো খাবার থাকতে হবে। লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত বই থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একাডেমিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে শাবিপ্রবির অসীম সাহসিকতা দেখিয়েছিলে। এখান থেকে লড়াই পুরো সিলেটে ছড়িয়ে পড়ে। এই আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একেকটা দুর্গ হয়ে উঠেছিল।
তিনি বলেন, এই একবছরে আমাদের অনেক চাওয়া পাওয়া পূরণ হয়নি। তবে দেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছে। অনেককিছু সংস্থার হচ্ছে।
নতুন বাংলাদেশে তরুণরাই নেতৃত্ব দেবে বলে এসময় মন্তব্য করেন তিনি।