চাঁদাবাজির ৪টি মামলা হলেও পুলিশ ধরছে না

আশুলিয়া বিএনপি পরিচয়ে প্রবাসীর বাড়িতে সন্ত্রাসী দুলালের হামলা , অগ্নি সংযোগ, ব‍্যাপক লুটপাট

Any Akter
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১:১০ অপরাহ্ন, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকার আশুলিয়ায় কানাডা প্রবাসী বাড়িতে দফায় দফায় স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা প্রবাসীর বাড়িতে হামলা লুটপাট করলেও পুলিশ দুর্বৃত্তদের গ্রেফতার করছে নামোটা অংকের চাঁদার দাবিতে বারবার রাতের আধারে সশস্ত্র হামলা চালানো হচ্ছেসন্ত্রাসীদের ধরতে নীরবতাও রহস্যজনক। চাঁদাবাজি ও ডাকাতির চারটি মামলা হলেও আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতে জনমনে ভীতির সঞ্চার হয়েছে।

ঢাকার আশুলিয়া ধামসোনা ইউনিয়ন বিএনপি নামদারী সন্ত্রাসী আসাদুল হক দুলাল এবং তার সহযোগী আলম , সাইদুজ্জামান সাইদ , জুয়েল , কাদের, বড় নূরা , ছোট নূরা , বাবু , রাকিবুল, জামিল , সাগর , ইব্রাহিম, আশিক, আজিজুল ফরিদসহ প্রায় ৩৫-৪০ জন এলাকার অস্ত্রধারী চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নিয গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাত ২.৫০ মিনিটে কানাডা প্রবাসী মিসেস মরিয়ম ইয়াসমিনের এগ্রো ফার্মে অবৈধ বন্দুক , বোমা, পিস্তল , রাম দা ,চেনি ব‍্যরাত আবারও হামলা চালায় । থানায় দায়ের করা মামলা ও ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসী জানায় প্রথমে প্রজেক্টের বিদুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় তারপর সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ব‍্যপাক বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় এবং গুলি চালিয়ে আমাদের প্রজেক্ট ৫ জন কমী’কে চাঁদা এবং হত্যার উদ্দেশ্যে আহত করে ।এই খবর পেয়ে আমরা ৯৯শফোন করি এবং পুলিশের সহযোগিতায় চাই । কিন্তু পুলিশ আসার আগেই সন্ত্রাসীরা ব‍্যপাক তান্ডব ঘটায় ! আমাদের সীমানা প্রাচীর ভেঙে ফেলে , ব‍্যপাক লুটপাট, ভংচুর, অগ্নিসংযোগ করে এবং আমাদের কমি’দের কে ভীষন মারধর করেপ্রায় ৩২০০০০০/= টাকার মালামাল নিয়ে যায়।

আরও পড়ুন: নাজিরপুরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা

ইতিপূবে’ও সন্ত্রাসীরা একই মাসের ১১ তারিখে ব‍্যপাক হামলা চালায় এবং আমরা সেনাবাহিনীর সহায়তা কামনা করি এবং দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনীর পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা পাই ! সেনাবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে দুষ্কৃতীকারীরা পালিয়ে যায় এবং কাসেম নামের আমাদের এক কর্মীকে সেনাবাহিনী উদ্ধার করে ! বাকি ০৪ জনকে যাদেরকে জোরপূর্বক প্রজেক্টের বাইরে নিয়ে আটকে রাখে তাদের কে রেখে পালিয়ে যায় । এর পর সেনাবাহিনী পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে সব আলামত সংগ্রহ করে আশুলিয়া থানা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর জনাব নাফিউল সহ পুনঃ তদন্ত করে আলামত জব্দ করে এবং রিপোর্ট জমা দেন ।

আরও পড়ুন: পিরোজপুর জেলা বিএনপির নতুন কমিটিকে জামায়াতের শুভেচ্ছা

সন্ত্রাসীরা ব‍্যাপক ভংচুর করে , এমন কোনো জিনিস অবশিষ্ট নাই যাহা তারা ভংচংর করে নাই ! ফ্রীজ, টিভি , ল্যাপটপ, মোবাইল, ২০ টা , ৩০ টা সিসি ক্যামেরা, লাইট, সোফা, খাট, চেয়ার , টেবিল, ষ্টীলের আলমারি,৩ বস্তা চাল , মুরগীর খাবার ০৫ বস্তা , গ্যাসের চুলা , সিলিন্ডার, কাপড় চোপড়, ২৫ টা ফ‍্যান , টচ লাইট ০৬ টা , ৩৬১ টা মুরগি , নগদ , টাকা-৪২১,৭৫০/( চার লক্ষ একুশ হাজার, সাতশত পন্চাশ টাকা মাত্র) আরও অনান‍্য সামগ্রী নিয়া যায়মোটামুটি আনুমানিক ৪০-৪৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে!

এলাকায় প্রকাশ্যে দুলাল বাহিনী এই পর্যন্ত চাঁদার দাবিতে এই প্রকল্পে ০৪ বার হামলা করে এবং বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় দুটি চাঁদাবাজীর মামলা রয়েছে যথা মামলা নং - ৯৮/৪৫৮ -২০২৫ এবং ৫১/৫১৫-২০২৫ কিন্ত অধ‍্যাবধি তাদের গ্রেফতারের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি এবং আসামীরা এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে নিজ গৃহে অবস্থান করছে !

বিএনপির দলীয় পরিচয়ে দুলাল বাহিনীর অত্যাচারে এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছেদ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আসামি আসাদুল হক দুলাল দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক পরিচয় ও প্রভাব খাটিয়ে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে আসছিলেন। তিনি একটি সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ও দখলবাজ চক্র পরিচালনা করেন, যার মাধ্যমে তিনি এলাকায় ভয় ও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ অনুযায়ী, ইতিপূর্বে এক মাসে তার বাড়িতে তিনবার হামলা হয়েছে।

হামলাগুলোতে ব্যবহার হয়েছে বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠিসোটা, ধারালো অস্ত্র ব্যাবহার,

সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুর, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা। এবং সর্বশেষ ১৬ জুলাই তারিখে দুলালের নেতৃত্বাধীন বাহিনী ব্যাপক বোমাবাজি, গুলি, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালিয়ে বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভেঙে ফেলে। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

আসামি সন্ত্রাসী দুলাল নিজে ছাড়াও আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে গড়ে তুলেছেন ভয়ঙ্কর এক সন্ত্রাসী বাহিনী, যার প্রধান হল কুখ্যাত সন্ত্রাসী আলম।

আলমের বিরুদ্ধে রয়েছে চাঁদাবাজি, অস্ত্র ব্যবসা, মাদক পাচার, অস্ত্র ভাড়া দেওয়া ও বহু মামলার ইতিহাস।

অভিযোগ রয়েছে, তার অস্ত্রভাণ্ডারে রয়েছে ৪-৬টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, যা দিয়ে সাভার-আশুলিয়ার সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পরিচালিত হয়।

সন্ত্রাসী দুলাল এই আলমের প্রধান রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষক।

মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন: চিহ্নিত সন্ত্রাসী দেলোয়ার, ছোট নূরা, বাবু, ফরিদ, বড় নূরা ও শাহাদাত। তারা সকলেই দুলালের নির্দেশে নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ আচ।

যদিও মামলা গ্রহণ করা হয়েছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত আসামিদের কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। বরং দুলাল প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং ভুক্তভোগীদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এতে স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও নিরাপত্তাহীনতা বিরাজ করছে।

একজন ভুক্তভোগী জানান

আমরা এখনো আতঙ্কে দিন কাটাই। টাকা না দিলে বাড়িতে সন্ত্রাসী পাঠায়। বলে আমি বিএনপির নেতা, কেউ আমার কিছু করতে পারবে না।’ এটা কি রাজনীতি, না অপরাধচক্র?

“চাঁদাবাজি, ডাকাতি, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও হত্যাচেষ্টা গুরুতর ফৌজদারি অপরাধ। এ ধরনের অপরাধে রাজনৈতিক পরিচয় নয়, আইনই সর্বোচ্চ হওয়া উচিত। থানার উচিত, অবিলম্বে র‍্যাব বা অন্যান্য বাহিনী দিয়ে অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করা।”ভুক্তভোগী ছাড়াও

স্থানীয়দের স্লোগান স্পষ্ট

অপরাধীর দলীয় পরিচয় নয়, তার অপরাধই বিবেচ্য হোক।”

তারা চাইছেন দ্রুত র‍্যাব মোতায়েন করে আসামিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।

এখন প্রশ্ন, আশুলিয়া থানা কি রাজনৈতিক চাপ উপেক্ষা করে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে?

না কি অপরাধী রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে বহাল তবিয়তে রয়ে যাবে?

এদিকে আশুলিয়া তানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান জানান প্রবাসীর বাড়িতে চাঁদাবাজি ভাঙচুরের ঘটনায় আমরা মামলা নিয়েছি। আসনের দুলাল ডাক্তার আলম এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। অন্তরী কর্মকান্ডের সাথে রাজনৈতিক কোন সম্পর্ক নেই। তাদের গ্রেফতারে আমাদের তৎপরতা চলছে। তবে তিনি আসামিরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করার বিষয়টি জানেন না।