মাইলস্টোন ট্রাজেডি: দগ্ধ শিক্ষার্থী আইমানের মৃত্যু, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৩২ অপরাহ্ন, ২৫ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ৯:১৯ পূর্বাহ্ন, ২৫ জুলাই ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আরও এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। ১০ বছর বয়সী আইমান নামের ওই শিশুটি শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল ৯টায় রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। তার শরীরের প্রায় ৪৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।

আইমানের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ জনে। এর আগে বুধবার পর্যন্ত ৩২ জনের মৃত্যুর তথ্য জানায় আইএসপিআর। বৃহস্পতিবার আরও দুই শিক্ষার্থী মারা যান।

আরও পড়ুন: যাত্রাবাড়ীতে এসি বিস্ফোরণে নারী-শিশুসহ একই পরিবারের চারজন দগ্ধ

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের যুগ্ম পরিচালক ডা. মারুফুল ইসলাম জানান, “আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে আইমান মারা গেছে। তার শরীরের বড় অংশ দগ্ধ ছিল, যা তার পক্ষে সহ্য করা সম্ভব হয়নি।”

তিনি আরও জানান, বর্তমানে ইনস্টিটিউটে ভর্তি আছেন ৪১ জন। তাদের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা চরম আশঙ্কাজনক এবং অন্তত ১৭ জন গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন। তিনি বলেন, “অনেক শিশুর শরীরের ৩০ শতাংশের বেশি পুড়ে গেছে। তাদের শঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না। তবে কয়েকজনের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। দু-একজনকে কয়েক দিনের মধ্যে রিলিজ দেওয়া হতে পারে।”

আরও পড়ুন: আগস্টে ৪৫১ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪২৮ জন

চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা নিয়ে ডা. মারুফুল বলেন, “আমরা দিন-রাত কাজ করছি। আমাদের সঙ্গে চীন, ভারত ও সিঙ্গাপুর থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলও যোগ দিয়েছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকেও চিকিৎসা সহায়তার আশ্বাস পাওয়া গেছে। তবে চিকিৎসা সংক্রান্ত সব খরচ সরকার বহন করছে। এখন পর্যন্ত রক্ত বা স্কিন ডোনেশনের প্রয়োজন হয়নি এবং আর্থিক সহায়তারও দরকার নেই।”

এদিকে, আইমানের মৃত্যুতে হাসপাতালজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। শিশুটির বাবা ইসমাইল হোসেন বাপ্পি বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। তাদের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর হলেও তারা পরিবার নিয়ে উত্তরায় বসবাস করতেন। মেয়েকে হারিয়ে পুরো পরিবারে চলছে আহাজারি। হাসপাতালের বারান্দা ভারি হয়ে উঠেছে স্বজনদের কান্নায়।

উল্লেখ্য, গত ২৩ জুলাই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাঙ্গণে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হলে আগুন ধরে যায়। এতে স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ বহু মানুষ দগ্ধ হন। দুর্ঘটনার কারণ জানতে ইতোমধ্যে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।