মোহাম্মদপুরে মা–মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মীর প্রকৃত পরিচয় উদ্ঘাটন
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডে মা–মেয়েকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন গৃহকর্মী ‘আয়েশা’র আসল পরিচয় শনাক্ত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে এখনো তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে তদন্তকারী সূত্র।
পুলিশ জানায়, হত্যায় জড়িত তরুণীর দেওয়া পরিচয় ভুয়া ছিল। তদন্তে তার প্রকৃত নাম–পরিচয় ও স্বামীর তথ্য পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তারের পর আনুষ্ঠানিকভাবে তা জানানো হবে। কর্মকর্তাদের ধারণা, তাকে জিজ্ঞাসাবাদেই নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য স্পষ্ট হবে।
আরও পড়ুন: পূর্ব শত্রুতার জেরে যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা
গত সোমবার সকালে ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিয়াকে (১৫) গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। চার দিন আগে ‘আয়েশা’ নামে পরিচয় দেওয়া ২০–২২ বছর বয়সী এক তরুণী ওই বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। ঘটনার পর থেকেই তিনি নিখোঁজ।
এজাহারে বলা হয়েছে, হত্যার পর বাসা থেকে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র উধাও পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মীকে আসামি করে মামলা
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, হত্যার কিছুক্ষণ পর গৃহকর্মী আয়েশা নাফিসার স্কুল ইউনিফর্ম পরে সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বাসা ত্যাগ করেন। তিনি সেদিন সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বাসায় প্রবেশ করেছিলেন। নিয়মিত বোরকা পরে কাজ করায় ক্যামেরায় তার মুখ শনাক্ত করা কঠিন হয়। আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো বন্ধ থাকায় তার পালানোর পথও স্পষ্ট নয়।
তদন্ত কর্মকর্তাদের দাবি, আয়েশা বাসা থেকে নেওয়া মোবাইল ফোনটি ভবনের গেট পেরোনোর সঙ্গে সঙ্গেই বন্ধ করে দেন। পরিবারের কারও সঙ্গে ফোনে যোগাযোগেরও কোনো রেকর্ড পাওয়া যায়নি।
নের্ত্যহত লায়লা আফরোজের স্বামী, স্কুলশিক্ষক আ জ ম আজিজুল ইসলাম, মোহাম্মদপুর থানায় গৃহকর্মীকে একমাত্র আসামি করে মামলা করেছেন। তিনি জানান, স্কুলে যাওয়ার পর স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে যোগাযোগ না পেয়ে বাসায় ফিরে দুজনের রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান।
সুরতহাল প্রতিবেদনে লায়লা আফরোজের শরীরে অন্তত ৩০টি ছুরিকাঘাত এবং মেয়ের শরীরে ৪টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্ত শেষে মা–মেয়ের দাফন সম্পন্ন হয়েছে নাটোরের দক্ষিণ বড়গাছায়।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন জানান, হত্যার উদ্দেশ্য এখনও পরিষ্কার নয়। আসামিকে ধরতে পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।





