ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিতের অভিযানে অংশ নেওয়া পাইলটদের সর্বোচ্চ সামরিক পদক দিলো পাকিস্তান

ভারতের ছয়টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার অভিযানে অংশগ্রহণকারী বিমানবাহিনীর সদস্যদের সর্বোচ্চ সামরিক বীরত্ব পদকে ভূষিত করেছে পাকিস্তান। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ইয়াওয়ান-ই-সদর প্রাসাদে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে এসব পদক প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারি এবং প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার মালিক রিজওয়ানুল হক-কে ‘তামঘা-ই-বাসালাত’ পরিয়ে দেন। পাকিস্তানের দাবি, মালিক রিজওয়ান ভারতীয় এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটি ইউনিট ধ্বংসের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে দুই বাংলাদেশির বিরুদ্ধে মামলা, হতে পারে ৩০ বছরের কারাদণ্ড
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তিনি আমাদের শত্রুর সবচেয়ে গর্বিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছেন। তিনি শুধু একজন পাইলট নন, তিনি আমাদের জাতির সাহসের প্রতীক।” এই ঘোষণায় পুরো অনুষ্ঠানস্থল করতালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ বিভাগ (ISPR) জানিয়েছে, মোট সাতজন বিমানবাহিনীর কর্মকর্তাকে ‘সিতারা-ই-জুরাত’ পদকে ভূষিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন চুক্তি নিয়ে পুতিনের অবস্থান স্পষ্ট করলেন ট্রাম্প, জেলেনস্কির উপস্থিতি নিয়ে নতুন তথ্য
২২ এপ্রিল, ভারতের জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে এক ভয়াবহ হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। ভারত এর দায় পাকিস্তানের উপর চাপায়, যদিও ইসলামাবাদ তা প্রত্যাখ্যান করে।
পরদিন, ২৩ এপ্রিল থেকে ভারত একাধিক কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক পদক্ষেপ নেয়—পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল, সিন্ধু নদ চুক্তি স্থগিত, সীমান্ত বন্ধ এবং দুই দেশের দূতাবাসে কার্যক্রম সীমিত করে দেয়।
৭ মে, ভারতের চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাকিস্তান শাসিত কাশ্মির ও পাঞ্জাবের ছয়টি শহরে বহু বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। এর জবাবে পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনিয়ানুম মারসুস’ নামে পাল্টা অভিযান শুরু করে এবং ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করার দাবি করে—যার মধ্যে তিনটি রাফাল জেট ছিল বলে জানানো হয়। পাকিস্তান আরও দাবি করে, তারা ভারতীয় বিমানঘাঁটি ও ক্ষেপণাস্ত্র গুদামেও হামলা চালিয়েছে।
দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কূটনৈতিক মধ্যস্থতা শুরু করেন। দীর্ঘ আলোচনার পর উভয় দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এবং ভারতের পররাষ্ট্রসচিব পরদিন সকালে আলাদা সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পরমাণু শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে এমন সরাসরি সামরিক সংঘর্ষ একদিকে যেমন নজিরবিহীন, তেমনি বিপজ্জনক। যদিও যুদ্ধ বন্ধ হয়েছে, তবে পারস্পরিক অবিশ্বাস এবং সামরিক উত্তেজনা এখনও বিদ্যমান।
এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারত কৌশলগতভাবে নীরবতা অবলম্বন করছে।