গাজায় গর্ভবতী নারী-শিশুসহ ৫৯ জন নিহত, ক্ষুধায় বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল

Sadek Ali
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৪৯ অপরাহ্ন, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১২:৪৯ অপরাহ্ন, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় প্রতিদিনই রক্ত ঝরছে। সর্বশেষ সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দখলদার বাহিনীর বিমান হামলায় প্রাণ গেছে অন্তত ৫৯ ফিলিস্তিনির। নিহতদের মধ্যে আছেন এক গর্ভবতী নারী ও তার অনাগত শিশু।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা সিটির শাতি শরণার্থী শিবিরের কাছে অভিযানে ইসরায়েলি সেনারা ওই নারী ও তার অনাগত শিশুকে হত্যা করে। একই হামলায় আরও এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সংবাদ সংস্থা ওয়াফা ও আল-শিফা হাসপাতালের চিকিৎসকরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আরও পড়ুন: সর্বোচ্চ প্রস্তুতিতে আছে ইরান: আইআরজিসি

গাজার দক্ষিণাংশের জায়তুন ও সাবরা এলাকায়ও ভয়াবহ বোমাবর্ষণ চালানো হয়, যেখানে অন্তত ১০ জন নিহত হন। গত এক মাসের অভিযানে এ পর্যন্ত এক হাজারেরও বেশি ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে দখলদার সেনারা।

দিনের শুরুতেই নাসের স্ট্রিটের ব্যস্ত বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আল জাজিরার সাংবাদিক মোয়াথ আল-খালুত জানান, হঠাৎ বিমান হামলায় বাজারে চারজন নিহত ও বহু মানুষ আহত হন। তিনি বলেন, *“মানুষ জানে না কোথায় যাবে, কোথায় আশ্রয় নেবে। শহরের প্রতিটি কোণায়ই হামলা চলছে।”*

আরও পড়ুন: ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধে এখনই বিশ্বকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে

এছাড়া দেইর আল-বালাহ এলাকার আল-মাজরা স্কুলে আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনিদের টার্গেট করে হামলা চালানো হয়। পরে আল-আকসা মার্টিয়ার্স হাসপাতাল আনাস সাঈদ আবু মুগসিব নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে।

যুদ্ধের পাশাপাশি গাজায় প্রকট হয়ে উঠেছে দুর্ভিক্ষ। জাতিসংঘ একে ‘মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ’ আখ্যা দিয়েছে। সোমবার খাদ্যসংকটে আরও তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। চলমান সংঘাতে এ পর্যন্ত অনাহারে প্রায় ৩৫০ জন প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের এক-তৃতীয়াংশই শিশু।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে গাজায় যে মানবিক সহায়তা প্রবেশ করছে, তা প্রয়োজনের মাত্র ১৫ শতাংশ।

তবু ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গত আগস্টে জাতিসংঘ সমর্থিত আইপিসির দুর্ভিক্ষ প্রতিবেদনকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে প্রত্যাখ্যান করেন।

অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি সোমবার এ দাবিকে অগ্রাহ্য করে বলেন, ইসরায়েলের সহায়তা আটকে রাখা *“অত্যন্ত নিন্দনীয়”*। তিনি মন্তব্য করেন, *“এটি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, একবিংশ শতাব্দীতে মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ। আরও মৃত্যু ঠেকাতে এখনই জরুরি মানবিক পদক্ষেপ প্রয়োজন।”*

তিনি অবিলম্বে গাজায় আটকে থাকা খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানান।