অতি গরম থেকে বাঁচতে লাইফস্টাইলে আনুন জরুরি পরিবর্তন

দেশজুড়ে শুরু হয়েছে প্রচণ্ড গরম। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে। কর্মজীবী মানুষ থেকে শুরু করে শিশু, বৃদ্ধ—সবাই রীতিমতো বিপদে। এমন খরতাপে বাড়ছে হিটস্ট্রোক, পানিশূন্যতা ও অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন,এটা শুধু আবহাওয়া নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের ফল। সময় এসেছে দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় কিছু সচেতন পরিবর্তন আনার।
পানি হবে আপনার সঙ্গী
আরও পড়ুন: রঙ ফর্সাকারী ক্রিমে যে ভয়ংকর ক্ষতি হচ্ছে আপনার
গরমে ঘাম বেড়ে যায়, শরীর হারায় প্রচুর পানি ও লবণ। দিনে অন্তত ৩ লিটার পানি পান করুন। ঘাম বেশি হলে ওআরএস বা ঘরে বানানো লবণ-চিনির পানি খান। ভুল করবেন না—চা, কফি বা কোমল পানীয় পানি নয়।
পোশাকে হোক বুদ্ধিমত্তা
আরও পড়ুন: সপ্তাহে কতবার ফ্রিজ বন্ধ করা উচিত, জানেন কী?
গরমে হালকা রঙের, ঢিলেঢালা সুতি পোশাক শরীরকে রাখে ঠান্ডা ও আরামদায়ক। টাইট জিনস বা সিন্থেটিক কাপড় শরীর ঘেমে ভিজিয়ে দেয়, হতে পারে চামড়ার সমস্যা।
রোদের সময় বাইরে
সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৪টা—এই সময় গরমের চরম রূপ। চেষ্টা করুন এই সময়ে ঘরের বাইরে না যেতে। যদি যেতেই হয়, তাহলে—ছাতা নিন, টুপি পরুন, সানগ্লাস ব্যবহার করুন এবং সানস্ক্রিন লাগান।
খাবারে পরিবর্তন
গরমে খাবার হতে হবে সহজপাচ্য ও পানিযুক্ত। তরমুজ, পেঁপে, শসা, টমেটো, দই, নারকেল পানি আপনার শরীরকে রাখবে হাইড্রেটেড। ভাজাপোড়া, মাংসজাত ও অতিরিক্ত ঝাল-মসলাযুক্ত খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
ঘর ঠান্ডা রাখার ঘরোয়া উপায়
সবাই তো আর এসি ব্যবহার করতে পারে না। তাই— জানালায় হালকা সাদা পর্দা দিন,প্রতিদিন পানিতে কাপড় ভিজিয়ে ঘরের মেঝে মুছুন, ছাদে গামলা করে পানি রেখে দিলে চারপাশ ঠান্ডা হয় কিছুটা।
মানসিক শান্তি
গরমে মানুষ সহজেই চটে যায়, মানসিক অস্থিরতা বাড়ে। দিনে অন্তত ১৫ মিনিট ধ্যান, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম বা হালকা যোগচর্চা রাখুন। স্ক্রিন টাইম কমিয়ে, প্রকৃতি বা বইয়ের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটান।
শিশু, বয়স্ক ও রোগীদের অতিরিক্ত যত্ন
তারা নিজের অসুবিধা ঠিকমতো বোঝাতে পারে না বা সহ্য করতে পারে না।শিশুদের গায়ে অতিরিক্ত কাপড় দেবেন না, বয়স্কদের বারবার পানি খাওয়ান, যাদের ডায়াবেটিস, কিডনি সমস্যা বা উচ্চ রক্তচাপ আছে—তাদের জন্য গরম হতে পারে প্রাণঘাতী, তাই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শে থাকুন।
হিটস্ট্রোক বা হিট এক্সহস্শনের লক্ষণ
মাথা ঘোরা, ঘাম বন্ধ হয়ে যাওয়া, বমিভাব, হঠাৎ দুর্বল লাগা, ত্বক শুকনো ও গরম। এসব হলে অবিলম্বে ছায়ায় যান, ঠান্ডা পানি পান করুন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসা নিন।
প্রকৃতির রোষ আমরা ঠেকাতে পারি না, তবে প্রতিদিনের আচরণ ও অভ্যাস দিয়ে রক্ষা করতে পারি আমাদের শরীর, পরিবার ও প্রিয়জনদের। গরমের সময়টুকু সতর্ক ও সংযত জীবনই হতে পারে জীবনরক্ষার চাবিকাঠি।