ভাইরাল জ্বর ও ঋতু পরিবর্তনে সুস্থ থাকতে কী খাবেন, কী এড়াবেন
ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে ভাইরাল জ্বর, ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া ও নানা সংক্রমণের প্রকোপ বাড়ছে। অনেকের ক্ষেত্রে সর্দি-কাশি, পেটের গোলমাল সহজে সারছে না। জ্বর কমার পরেও ক্লান্তি, গা-হাত-পায়ে ব্যথা, গলা ব্যথা ও খাবার গিলতে কষ্টের মতো সমস্যায় ভুগছেন অনেকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সময় দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে সামান্য সচেতনতা থাকলেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব। সঠিক খাবার শরীরকে দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে এবং দুর্বলতা কাটায়।
আরও পড়ুন: শীতে শুষ্ক ত্বকের যত্নে কার্যকর ৩ প্রাকৃতিক ক্লিনজার
জ্বরের সময় কোন খাবার বেশি উপকারী
জ্বরের সময়ে ও অসুস্থতার শুরুতে হালকা ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়াই সবচেয়ে ভালো। এ সময় স্যুপ সবচেয়ে উপকারী খাবার হিসেবে বিবেচিত। সবজি দিয়ে তৈরি হালকা স্যুপ বা চিকেন স্যুপে থাকে ভিটামিন, খনিজ ও ফাইবার, যা শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগায়।
আরও পড়ুন: ফ্যাটি লিভার কমাতে সহায়ক ৩ প্রাকৃতিক পানীয়
মুসুর ডাল দিয়েও স্যুপ তৈরি করা যেতে পারে। ভিজিয়ে রাখা ডাল, পেঁয়াজ, আদা ও টমেটো সামান্য ঘি দিয়ে সেদ্ধ করে লবণ ও গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়। পাশাপাশি টাটকা ফলের রস পান করাও উপকারী।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কী খাবেন
এই সময়ে প্রাকৃতিক ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ পানীয় শরীরের জন্য খুবই দরকার। আনারসের টুকরো ও পুদিনা পাতা পানিতে ভিজিয়ে রেখে পান করলে শরীর সতেজ থাকে।
দুধ-চিনি দেওয়া চা বা কফি এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা, কারণ অতিরিক্ত ক্যাফিন শরীরে প্রদাহ বাড়াতে পারে। এর পরিবর্তে গ্রিন টি বা তুলসী ও দারুচিনির মতো ভেষজ চা দিনে দুইবার খেলে আরাম পাওয়া যায়।
তুলসী পাতা ফুটিয়ে মধু ও লেবু মিশিয়ে তৈরি তুলসী চা এবং দারচিনি গুঁড়া, লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে তৈরি দারচিনির চা—উভয়ই ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর, যা রোগমুক্তিতে সহায়তা করে।
জ্বর সেরে যাওয়ার পর খাবারে নজর
জ্বর কমে যাওয়ার পরেও অনেকের শরীরে ক্লান্তি ও মুখে অরুচি থেকে যায়। এ সময় ডাবের জল দুর্বলতা কাটাতে দারুণ কার্যকর। এটি শরীরের জল ও খনিজের ভারসাম্য বজায় রাখে।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার শরীরে শক্তি ফেরাতে সাহায্য করে। যেমন—ডিমের সাদা অংশ, চর্বি ছাড়া মাছ ও মুরগির মাংস, দুধ ও দই। নিরামিষাশীদের জন্য ছোলা, মুসুর ডাল, সয়াবিন ও বিভিন্ন বাদাম ভালো বিকল্প।
হজমের সুবিধার জন্য খিচুড়ি ও ওটস খাওয়া যেতে পারে। ভাতের সঙ্গে পাতলা মাছের ঝোলও উপকারী। গলা ব্যথা ও কাশি কমাতে মধু প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিকের মতো কাজ করে; সকালে পানির সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
কোন খাবারগুলো এড়িয়ে চলবেন
এই সময়ে কিছু খাবার একেবারেই এড়িয়ে চলা জরুরি। অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার যেমন—নরম পানীয়, চকোলেট, আইসক্রিম খাওয়া ঠিক নয়। ফ্রিজে রাখা পাউরুটি, বাসি খাবার, চিপস, সস, জাঙ্ক ফুড এবং সব ধরনের প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন।
রাস্তায় বিক্রি হওয়া লাচ্ছি বা শরবতও এই সময়ে খাওয়া উচিত নয়। খাদ্যাভ্যাসে এসব ছোট পরিবর্তন আনলেই ভাইরাল জ্বর ও অন্যান্য সংক্রমণের দুর্বলতা কাটিয়ে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব।





