ঈদের আগে মুক্তি পাচ্ছে না এমভি আবদুল্লাহ'র নাবিকরা

Abid Rayhan Jaki
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন, ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | আপডেট: ৮:২০ পূর্বাহ্ন, ০৫ এপ্রিল ২০২৪
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি মালিকানাধীন জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিক যেকোনো সময় মুক্তি পেতে পারেন। তবে ঈদের আগে তাদের দেশে ফেরানো সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জাহাজ মালিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জলদস্যুদের সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে। মুক্তিপণের বিষয়ে প্রায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে মুক্তিপণ কীভাবে দেওয়া হবে, নাবিকদের কীভাবে ফিরিয়ে আনা হবে, জাহাজটি সেখান থেকে কীভাবে দুবাইয়ের উদ্দেশে যাবে, এসব নিয়ে চলছে জোর আলোচনা।

আরও পড়ুন: সেনাবাহিনী প্রধানের নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো অ্যাকাউন্ট নেই: আইএসপিআর

এদিকে, জিম্মি নাবিকদের স্বজনরা পথ চেয়ে আছেন ঈদের আগে তারা বাড়িতে ফিরবে এমন আশায়। মুক্তি পেলেও ঈদের আগে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আনোয়ারা উপজেলার বাসিন্দা শামসুদ্দিন। তিনি জাহাজটিতে ওয়েলার পদে কর্মরত। তার স্ত্রী রিমা আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের ঘরে ঈদের আনন্দ নেই। ছোট তিন মেয়েকে নিয়ে বেশ কষ্টে আছি। পথ চেয়ে আছি কখন তাকে ফিরে পাবো। শোনার অপেক্ষায় আছি তারা দস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তিনি (শামসুদ্দিন) যখন আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন তখন আমাদের ঘরে ঈদ আনন্দ আসবে।

আরও পড়ুন: দুর্নীতির তদন্তে সাবেক গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নরদের ব্যাংক হিসাব তলব

শামসুদ্দিনের ভগ্নিপতি বদরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, শামসুদ্দিন এক-দুই দিন পর ফোন করে। তারা বর্তমানে ভালো আছেন। দস্যুরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাহারায় থাকলেও তারা জাহাজের নিয়মিত কাজ করছেন। জাহাজ মালিকের সঙ্গে দস্যুদের আলোচনা হচ্ছে, বিষয়টি নাবিকরা বুঝতে পারছেন। তবে কবে মুক্ত হচ্ছেন তা বলতে পারছেন না।

কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, দস্যুদের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ। যেকোনও সময় জিম্মিদশা থেকে নাবিকরা মুক্তি পাবেন। কখন মুক্তি পাচ্ছেন তা সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। মুক্তি ঈদের আগেও হতে পারে, আবার ঈদের পরেও হতে পারে। মুক্তি পাওয়ার পর সব প্রক্রিয়া শেষ করে নাবিকদের আকাশপথে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। ওই জাহাজে নতুন করে ২৩ জনকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের জন্য ২৩ জন নাবিকের নতুন একটি টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

জানা গেছে, এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি কবির গ্রুপের এস আর শিপিংয়ের মালিকানাধীন।

এসআর শিপিং সূত্রে জানা গেছে, এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে প্রায় ৫৫ হাজার মেট্রিন টন কয়লা আছে। গত ৪ মার্চ আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে যাত্রা করে জাহাজটি। ১৯ মার্চ সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। ভাড়ার বিনিময়ে মোজাম্বিক থেকে দুবাইয়ের আমদানিকারকের কাছে কয়লা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল এমভি আবদুল্লাহর। এর মধ্যে ১২ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুর কবলে পড়ে জাহাজটি।

এই প্রতিষ্ঠানটির অধীনে মোট ২৪টি জাহাজের মধ্যে সর্বশেষ যুক্ত করা জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। ২০১৬ সালে তৈরি এই বাল্ক ক্যারিয়ারটির দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্থ ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। ড্রাফট ১১ মিটারের কিছু বেশি। গত বছর জাহাজটি এস আর শিপিং কিনে নেওয়ার আগে এটির নাম ছিল গোল্ডেন হক। মালিকানা পরিবর্তনের পর জাহাজের নামও পরিবর্তন করে রাখা হয়। নতুন করে এর নাম রাখা হয় এমভি আবদুল্লাহ।