সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে জাইকা ও ডিএমপি’র যৌথ উদ্যোগ
                                        সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে জনসচেতনতা। আর এই সচেতনতা তৈরির লক্ষ্য নিয়ে যৌথভাবে কাজ করছে জাইকা ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ‘ঢাকা রোড ট্রাফিক সেফটি প্রজেক্ট’ শীর্ষক এই উদ্যোগের আওতায় সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজিত হয় পোস্টার ডিজাইন ও স্লোগান প্রতিযোগিতা। নিরাপদ সড়কের গুরুত্ব নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং এ সংক্রান্ত কার্যক্রমে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ১৬টি স্কুল ও ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। আজ ৬ জুন, ঢাকার শিল্পকলা একাডেমির ন্যাশনাল থিয়েটার হলে এই প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।
জাইকা’র কারিগরি সহায়তায় ‘ঢাকা রোড সেফটি প্রজেক্ট’ বাস্তবায়ন করছে ডিএমপি। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করতে নানান বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করে বাস্তবায়িত হচ্ছে এই প্রকল্পটি। এর অংশ হিসেবে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই পোস্টার ডিজাইন ও স্লোগান প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সড়ক নিরাপত্তা ও দায়িত্বশীল আচরণের গুরুত্ব বিষয়ক পোস্টার ও স্লোগান তৈরির মাধ্যমে এ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে দেশজুড়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়।
আরও পড়ুন: নতুন আরপিও জারি, যুক্ত হলো ‘না ভোট’ ও ফেরারি প্রার্থীর অযোগ্যতা
জাইকা আয়োজিত এ প্রতিযোগিতার প্রাণকেন্দ্রে ছিল শিক্ষার্থীরা। তাদের তৈরি সৃষ্টিশীল পোস্টার ও স্লোগান নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে তাদের অঙ্গীকার প্রতিফলিত করে। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের এই সৃজনশীলতাকে অনুপ্রাণিত করা হয়। ডিএমপি কমিশনার অ্যাওয়ার্ড, ডিএমপি অ্যাডিশনাল কমিশনার (ট্রাফিক) অ্যাওয়ার্ড, জাইকা অ্যাওয়ার্ড, জেট্রো অ্যাওয়ার্ড, জেসিআইএডি – নিপ্পন সিগনাল অ্যাওয়ার্ড, জেসিআইএডি – টেক্কেন কর্পোরেশন অ্যাওয়ার্ড ও ডিআরএসপি অ্যাওয়ার্ড এই মোট ৭টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাবিবুর রহমান, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) বলেন, “এখন যারা স্কুল বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, তারাই আগামী দিনে দেশের অভিভাবক। আমি মনে করি, ডিআরএসপি’র মতো সচেতনতামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে তরুণরা সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন হওয়ার মাধ্যমে নিজেরা আইন মেনে চলবেন; পাশাপাশি, তাদের বন্ধু ও পরিবারের অন্যান্যদের একই কাজ করতে এবং সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে উদ্বুদ্ধ করবেন।”
আরও পড়ুন: বিএনপির যেসব প্রভাবশালী নেতা মনোনয়ন পাননি
জাইকা বাংলাদেশ অফিসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদে বলেন, “বিগত কয়েক দশক ধরে বিভিন্ন খাতে প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে সহায়তা করছে জাইকা। এর মাধ্যমে আমাদের অংশীদারিত্ব আরও জোরদার হয়েছে। ঢাকা মহানগরে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে জাইকা ও ডিএমপি’র যৌথ প্রচেষ্টায় ঢাকা রোড ট্রাফিক সেফটি প্রজেক্টটি বাস্তবায়িত হয়েছে। জাইকা ও বাংলাদেশের এক সাথে ৫১ বছরের যাত্রায় এটি একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে সচেতনতা খুবই জরুরি। আমার মতে, এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের তৈরি পোস্টার ও স্লোগানগুলো শক্তিশালী ভূমিকা পালন করবে। শিক্ষার্থীদের এই কার্যক্রম ট্রাফিক নিয়ম-কানুন প্রসঙ্গে জনগণকে আরও সচেতন ও দায়িত্বশীল করে তুলবে, ফলে, সবার জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি হবে।”
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিআরএসপি’র প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত কমিশনার (ট্র্যাফিক) মো. মুনিবুর রহমান। ডিআরএসপি’র প্রকল্প পরিচালক ও এডিসি (ট্র্যাফিক অ্যাডমিন ও রিসার্চ) মো. জাহাঙ্গীর আলম সবার সামনে প্রকল্প উপস্থাপন করেন এবং এ প্রোগ্রামে ডিএমপি’র সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে কার্যক্রম সবার সামনে তুলে ধরেন। ডিএমপি’র সম্মানিত কর্মকর্তা, জাইকা’র বিশেষজ্ঞ দলের সদস্য, জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের কর্মকর্তা, জাপান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র কর্মকর্তা এবং ১৬টি স্কুল ও ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ ৭শ’রও বেশি অংশগ্রহণকারীর উপস্থিতি আয়োজনটিকে সফল করে তোলে





                                                    