ঢামেকে জরুরি বিভাগ চালু থাকলেও বন্ধ বহির্বিভাগ

Abid Rayhan Jaki
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৪৯ অপরাহ্ন, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | আপডেট: ৭:৪৫ পূর্বাহ্ন, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

রোববার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে জরুরি সেবা কার্যক্রম শুরু হলেও বন্ধ রয়েছে বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা। সোমবার সকাল থেকে দেশের সবচেয়ে বৃহৎ সরকারি এ হাসপাতালের বহির্বিভাগে সেবা বন্ধ রেখেছেন চিকিৎসকরা। 

আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের এক নেতা জানিয়েছেন, আগামী সাত দিন সারাদেশে হাসপাতালে বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা বন্ধ থাকবে।

আরও পড়ুন: ইসির প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ে উত্তীর্ণ এনসিপিসহ ১৬ দল

এতে চাপ পড়েছেন জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগে সেবা নিতে আসা রোগীরা। জরুরি বিভাগের লাইনে দাঁড়িয়ে রোগীদের সেবা নিতে দেখা গেছে। 

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূর জাহান বেগমের আশ্বাসে কর্মবিরতি স্থগিত করে কাজে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। রোববার সারা দিন পর রাত ৮টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা সেবা দেওয়া শুরু করেন তারা।

আরও পড়ুন: পলাতক ৪০ পুলিশ কর্মকর্তার পদক প্রত্যাহার

এর আগে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার নিশ্চিত করা এবং কর্মস্থল নিরাপদ করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। বৈঠক থেকে বেরিয়ে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তিনি বলেন, চিকিৎসকদের দাবি-দাওয়া যত দ্রুত সম্ভব পূরণ করা হবে। এ সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জমান বলেন, তারা জরুরি সেবাসহ কিছু সেবা এখনই চালু করবেন।

আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মবিরতি অব্যাহত রাখবেন। এরপর বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে আলোচনা চলতে থাকে। রাত ৮টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসকেরা কাজে যোগ দেন।

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত এক শিক্ষার্থীর চিকিৎসায় অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শনিবার হট্টগোল হয়। সে সময় এক চিকিৎসককে মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে এ ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।

শনিবার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জেরে উত্তপ্ত হয় প্রতিষ্ঠানটি। গতকাল রোববার সারাদেশে সরকারি হাসপাতালে ‘কমপ্লিট শাটডাউনের’ ডাক দেন চিকিৎসকরা। শনিবার ঢামেকে কী ঘটেছিল– তার খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত এক ছাত্রের চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে তিন চিকিৎসককে মারধর করেন কিছু শিক্ষার্থী। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) ওই ছাত্রের নাম আহসানুল হক দীপ্ত। তাঁর মৃত্যুর জের ধরে ভাঙচুর করা হয় হাসপাতালের নানা সরঞ্জাম। দ্বিতীয়ত, খিলগাঁওয়ের সিপাহীবাগে দু’পক্ষের সংঘাতের ঘটনায় আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে ঢামেকের জরুরি বিভাগের সামনে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আরেক পক্ষ এসে রোগীর ওপর হামলা করে। এতে আতঙ্ক ছড়ায় হাসপাতালে। তৃতীয় আরেকটি ঘটনায় রোগীর চিকিৎসার অবহেলার অভিযোগ এনে হাসপাতালে ভাঙচুর করে স্বজনরা। 

এক দিনে এমন তিনটি অপ্রীতিকর ঘটনার সূত্র ধরে শনিবার রাতে বিক্ষোভ করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এতে অন্যান্য চিকিৎসক ও হাসপাতালের কর্মীরা একাত্মতা প্রকাশ করেন। জড়িতদের গ্রেপ্তারসহ কয়েকটি দাবিতে গতকাল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢামেকে বন্ধ ছিল সব ধরনের চিকিৎসা কার্যক্রম।