কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় ট্রেন পরিচালনায় রেলওয়ের ১৪ দফা নির্দেশনা
শীত মৌসুমের শুরুতেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘন কুয়াশা দেখা দিতে পারে—এমন আশঙ্কায় ট্রেন চলাচলে বাড়তি সতর্কতা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। কুয়াশার কারণে সিগন্যাল, লেভেল ক্রসিং গেট বা রেললাইনে প্রতিবন্ধকতা দৃশ্যমান না হওয়ার ঝুঁকি থাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ট্রেন পরিচালনায় সংশ্লিষ্ট কর্মীদের জন্য ১৪টি বিশেষ নির্দেশনা জারি করেছে।
সম্প্রতি রেলওয়ের ডেপুটি চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট (পশ্চিম) মোসা. আরফিন নাহার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই নির্দেশনা বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক—পাকশী ও লালমনিরহাটের কাছে পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, নির্দেশনা অনুসরণ না করলে ট্রেন চলাচলে মারাত্মক দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়বে এবং রেলওয়ের সম্পদ ও যাত্রীদের জানমালের ক্ষতি হতে পারে।
আরও পড়ুন: সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ
শীতকালে বিশেষ করে রাতের বেলায় স্টেশন মাস্টারসহ ট্রেন পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার সর্বোচ্চ সতর্কতা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সেকশনাল টিআই/জেটিআই, এসএসএই/(এলআই/সিগ), এবং কন্ট্রোল অফিসে কর্মরত সিটিএনএল, ডিটিএনএল ও টিএনএলদেরও পরিস্থিতির ওপর বিশেষ নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কুয়াশায় ট্রেন পরিচালনায় রেলওয়ের ১৪ নির্দেশনা
আরও পড়ুন: ভূমিকম্পে রাজধানীর অন্তত ৬ মেট্রোরেল স্টেশনে ফাটল
১. নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিটি সেকশনের কুয়াশা পরিস্থিতি সম্পর্কে টিএনএলদের নিয়মিত খোঁজ নিতে হবে এবং প্রয়োজনে লোকোমাস্টারকে কশন অর্ডার (ওপিটি–৮০) দিতে হবে।
২. কুয়াশাচ্ছন্ন সেকশনে লেভেল ক্রসিং থাকলে তা উল্লেখ করে স্টেশন মাস্টার কশন অর্ডার ইস্যু করবেন।
৩. কোনো স্টেশন কুয়াশাচ্ছন্ন হলে পাশের দুটি স্টেশন ও কন্ট্রোল অফিসকে তা জানাতে হবে।
৪. ঘন কুয়াশায় বিধি অনুযায়ী ফগ সিগন্যাল ব্যবহার এবং লেভেল ক্রসিং গেটে ট্রাফিক বন্ধ আছে নিশ্চিত করতে হবে।
৫. লোকোমাস্টার ও গার্ডকে অতিরিক্ত সতর্কতা নিয়ে ট্রেন পরিচালনার নির্দেশ দিতে হবে।
৬. রাত্রিকালীন ট্রেনের ক্ষেত্রে এলএম ও গার্ডের মোবাইল নম্বর কন্ট্রোল চার্টে লিপিবদ্ধ রাখতে হবে।
৭. লাইন ক্লিয়ার কেবল স্টেশন মাস্টারই দেবেন—এ নিশ্চয়তা টিএনএলদের নিতে হবে।
৮. অন্য কারও সঙ্গে কোনো অবস্থায় লাইন ক্লিয়ার আদান–প্রদান করা যাবে না।
৯. টেইল ল্যাম্প বা টেইল বোর্ড নিশ্চিত না হলে ইনরিপোর্ট দেওয়া যাবে না।
১০. নন-ইন্টারলকড স্টেশনে দুই ট্রেনের ক্রসিংয়ের সময় বিধি মেনে পয়েন্ট সেটিং নিশ্চিত করতে হবে।
১১. বিরতিহীন স্টেশনে ক্রসিংয়ের সময় উভয় ট্রেনকে আউটার সিগন্যালে ডেড স্টপ করতে হবে।
১২. শীতকালে নৈশ সংকেত পরিদর্শন কার্যক্রম বাড়াতে হবে।
১৩. দীর্ঘ সময় কুয়াশা থাকলে জরুরি সেল খোলার ব্যবস্থা করতে হবে।
১৪. স্টেশনে পর্যাপ্ত ফগ সিগন্যাল মজুত রাখতে হবে এবং সঠিকভাবে ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়—ঘন কুয়াশার সময় রেলওয়ের সব কর্মকর্তা–কর্মচারীকে নিরাপত্তা বিধিবিধান কঠোরভাবে অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করা অত্যন্ত জরুরি।





