আবু সাঈদ হত্যায় পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা

কোটা আন্দোলন যেভাবে পরিবর্তিত হয় গণঅভ্যুত্থানে

Any Akter
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:২৩ পূর্বাহ্ন, ১৬ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ৫:২৩ পূর্বাহ্ন, ১৬ জুলাই ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ ও পুলিশের হামলায় রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদসহ সারাদেশে অন্তত ৬ জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনাগুলো ছাত্র-জনতার মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একপ্রকার গণঅভ্যুত্থানের রূপ নিয়েছে।

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী ও আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু সাঈদকে ১৬ জুলাই বিকেলে পুলিশের শটগান থেকে সরাসরি গুলি করে হত্যা করা হয়। তার বুক পেতে দাঁড়ানোর মুহূর্তের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে উত্তাল প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

আরও পড়ুন: বাধ্যতামূলক অবসরে ডিএমপির সাবেক ৯ ওসি

ঢাকা কলেজ ও সায়েন্সল্যাব এলাকায় ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে নিহত হন হকার মো. শাহজাহান (২৪) এবং নীলফামারীর সাবুজ আলী (২৫)। চট্টগ্রামে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা ওয়াসিম আকরাম, শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ ও কর্মচারী মো. ফারুক।

১৬ জুলাই শিক্ষার্থীরা ঢাকা, চট্টগ্রাম, বগুড়া, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে সড়ক ও রেল অবরোধ করে। মহাখালীতে রেললাইন অবরোধ করায় ছয় ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। রাজধানীর শান্তিনগর, যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, প্রগতি সরণি, মিরপুর, ফার্মগেট, উত্তরা, মতিঝিলসহ নানা এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

আরও পড়ুন: হাসিনার প্রিজম দিয়ে বাংলাদেশকে দেখায় ভারতকে মূল্য দিতে হচ্ছে

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার ঢাকা, চট্টগ্রাম, বগুড়া, রংপুর, রাজশাহী ও গাজীপুরে বিজিবি মোতায়েন করে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে এবং ১৮ জুলাইয়ের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

আওয়ামী লীগ কর্মীদের ইউনিট অফিসে থাকার নির্দেশ দেয় এবং জানায় তারা রাজনৈতিকভাবে আন্দোলনের মোকাবিলা করবে। সরকার কোটা বহাল সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে আবেদন করে।

বিপরীতে, বিরোধী দল বিএনপি ও ছাত্রদল আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে মাঠে থাকার ঘোষণা দেয়। কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে পদত্যাগ করেন।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সাউথ এশিয়া, টিআইবি, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনসহ পাঁচটি মানবাধিকার সংগঠন নিন্দা জানায়। একইসঙ্গে ১১৪ জন বিশিষ্ট নাগরিক এবং ১৯৯০-এর ডাকসু নেতারা আন্দোলনকারীদের পাশে থাকার ঘোষণা দেন।

১৭ জুলাই ঢাবির রাজু ভাস্কর্যে গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিলের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনের নেতা আসিফ মাহমুদ।