জুলাই সনদের দাবিতে দ্বিতীয় দিনেও শাহবাগ অবরোধ, জনজীবনে দুর্ভোগ

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৭:৪১ অপরাহ্ন, ০১ অগাস্ট ২০২৫ | আপডেট: ১:৪১ অপরাহ্ন, ০১ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

'জুলাই সনদ' বাস্তবায়ন এবং এটিকে স্থায়ী আইনি রূপ দেওয়ার দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো শাহবাগ মোড় অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন 'জুলাই যোদ্ধা সংসদ'-এর সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সকাল থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকেল পর্যন্তও চলমান রয়েছে। এর ফলে শাহবাগ ও আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে, যা নগরবাসীর জন্য ব্যাপক দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে।

দেখা যায়, মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যেও বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন। তারা সড়কের চারপাশে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছেন, ফলে শাহবাগ মোড় দিয়ে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। শহরের এই গুরুত্বপূর্ণ মোড়টি অবরুদ্ধ থাকায় কাটাবন, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, মৎস্যভবন ও শাহবাগ থানার সামনের সড়কসহ সব রুটে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বিকল্প পথে যানবাহন ঘুরিয়ে দেওয়ায় আশপাশের এলাকাতেও যানচলাচল ধীর হয়ে পড়েছে।

আরও পড়ুন: ইসির প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ে উত্তীর্ণ এনসিপিসহ ১৬ দল

এই অবরোধের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা। একাধিক মোটরসাইকেল চালক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "আন্দোলনের কারণে প্রতিদিন এক ঘণ্টার রাস্তা পাড়ি দিতে তিন ঘণ্টা সময় লাগছে। যারা রাইড শেয়ার করেন, তাদের চরম ক্ষতি হচ্ছে। আমরাও জুলাইয়ের আন্দোলন করেছি, কিন্তু এখন আমাদেরই দুর্ভোগ বেশি।"

অবরোধকারীরা বলছেন, সরকারের কাছে বারবার দাবি জানানো হলেও জুলাই সনদের বাস্তবায়নে কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। এ কারণেই আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা বাধ্য হয়ে আবারও আন্দোলনে নেমেছেন।

আরও পড়ুন: পলাতক ৪০ পুলিশ কর্মকর্তার পদক প্রত্যাহার

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর জানান, অবরোধকারীরা বৃহস্পতিবার রাতভর শাহবাগ মোড়ে অবস্থান করেছেন এবং বৃষ্টির মধ্যেই তারা তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। 'জুলাই যোদ্ধা সংসদ'-এর মুখ্য সংগঠক মাসুদ রানা জানান, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা শাহবাগ ত্যাগ করবেন না।

আজ ছুটির দিন হওয়ায় অফিসমুখী মানুষের চাপ কিছুটা কম থাকলেও, যানবাহন না পেয়ে সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তি সহ্য করে গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে।

অবরোধকারীদের প্রধান দাবিগুলো হলো:

  • জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের স্বীকৃতি প্রদান।
  • শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের আজীবন সম্মান, চিকিৎসা, শিক্ষা ও কল্যাণের পূর্ণ নিশ্চয়তা দেওয়া।
  • শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের দায়িত্ব গ্রহণ করা।
  • আহত ব্যক্তিদের সব চিকিৎসা, পুনর্বাসন, কর্মসংস্থান ও কল্যাণমূলক ব্যয় রাষ্ট্রকে বহন করা।
  • শহীদ ও আহত পরিবারের জন্য আজীবন সম্মানজনক ভাতা নিশ্চিত করা।
  • শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ আইনি সুরক্ষা ও সহায়তাকেন্দ্র গঠন করা।
  • শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের ওপর সংঘটিত দমন-পীড়নের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বিচারকাজ সম্পন্ন করা।
  • একটি স্বাধীন সত্য ও ন্যায় কমিশন গঠন করা।