খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার রিপোর্ট
প্রকাশিত: ৫:৪২ অপরাহ্ন, ১০ অগাস্ট ২০২৫ | আপডেট: ৫:৪২ অপরাহ্ন, ১০ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

"শুধু খাদ্য নিরাপত্তা নয়, খাদ্য কতটা নিরাপদ সেটিও নিশ্চিত করা জরুরি" — আজ বরিশালে এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

তিনি বলেন, “হাসপাতাল বাড়িয়ে লাভ নেই, যদি আমরা নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত না করতে পারি। নিরাপদ খাদ্যের মাধ্যমে শুধু পুষ্টি নয়, স্বাস্থ্য সমস্যাও কমানো সম্ভব।” বিশেষ করে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও ক্যান্সারের মতো অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে নিরাপদ খাদ্যের গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি।

আরও পড়ুন: পলাতক ৪০ পুলিশ কর্মকর্তার পদক প্রত্যাহার

রোববার (১০ আগস্ট) সকালে বরিশালের হোটেল গ্র্যান্ড পার্কের কনফারেন্স হলে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আওতাধীন ‘প্রাণিসম্পদ ও দুগ্ধ উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি)’ এর উদ্যোগে আয়োজিত ‘বিভাগীয় অগ্রগতি পর্যালোচনা কর্মশালা’-তে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

দুধ উৎপাদনের ঘাটতির বিষয় উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, “দেশে এখনো দুধ আমদানি করতে হয়। এলডিডিপি প্রকল্পের মাধ্যমে দুধ উৎপাদন বাড়ালে আমিষ ঘাটতি পূরণ ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।”

আরও পড়ুন: বাধ্যতামূলক অবসরে সাতক্ষীরার সাবেক এসপি ও ডিএমপির ৯ ওসি

বরিশাল বিভাগের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এ অঞ্চলে গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি ও বিশেষ করে মহিষ পালনে বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। ভোলার মহিষের বাথান দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।”

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানির জন্য মহিষের দুধ উৎপাদন বাড়ানো ও সঠিকভাবে লালন-পালনের দিকে নজর দিতে হবে।

স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের পুষ্টি উন্নয়নে নেওয়া উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই প্রকল্পের আওতায় স্কুল শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ২০০ মি.লি. দুধ সরবরাহ করা হচ্ছে, যা শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শারীরিক বিকাশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।”

পশুখাদ্যের উৎপাদন খরচ কমাতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, “বিদ্যুৎ বিল কৃষি খাতের মতো প্রদানের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দানাদার খাদ্যের বিকল্প হিসেবে ঘাস চাষে জোর দিলে খরচ কমবে।”

নারী খামারিদের প্রতি উৎসাহ জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “প্রকল্পের সুযোগ কাজে লাগিয়ে নারীদের আরও এগিয়ে আসতে হবে।” তরুণদের উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হতে হবে। তরুণদের শক্তি দিয়েই দেশের অর্থনীতি বদলানো সম্ভব।”

কর্মশালায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশালের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, অধিদপ্তরের পরিচালক (সম্প্রসারণ) ডা. বেগম শামছুননাহার আহম্মদ, পরিচালক (উৎপাদন) ড. এ. বি. এম. খালেদুজ্জামান, এবং বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

স্বাগত বক্তব্য দেন প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. জসিম উদ্দিন। এলডিডিপির বরিশাল বিভাগে কার্যক্রম, সাফল্য, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন চীফ টেকনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর ড. মো. গোলাম রব্বানী।

কর্মশালায় চলমান কার্যক্রম, মাঠপর্যায়ের চ্যালেঞ্জ এবং উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। অংশগ্রহণকারীরা স্থানীয় পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর জোর দেন।

কর্মশালার শেষ অংশে উপদেষ্টা বরিশালের জেলা দুগ্ধ উন্নয়ন ও সহায়তা কেন্দ্র, ডেমো শেড, দুধের মূল্য সংযোজন ফার্ম এবং বাবুগঞ্জের রহমতপুর বাজারের ওয়েট মার্কেট পরিদর্শন করেন।