গুমের শিকার ৭ পরিবারের জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করল বিএনপি

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৬:১৪ অপরাহ্ন, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৬:১৪ অপরাহ্ন, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বংশালে গুমের শিকার ৭ পরিবারের স্বাবলম্বিতার জন্য একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করেছে বিএনপি।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বংশালের নতুন চৌরাস্তা এলাকায় ‘ফ্যাশন পার্ক’ নামের অনলাইন শপ ও শোরুমটির উদ্বোধন করেন গুমের শিকার বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী এবং যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার।

আরও পড়ুন: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদীয় আসনের সীমানা চূড়ান্ত, তালিকা প্রকাশ

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, “গুম হওয়া পরিবারগুলোকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমার নেই। তবে বলতে চাই, যারা গুম হয়েছেন তারা বাংলাদেশের প্রকৃত হিরো ছিলেন। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচার হবেই।”

ইসহাক সরকার বলেন, “আমাদের সহকর্মীরা ১২-১৩ বছর ধরে গুমের শিকার। আজও তাদের কোনো খোঁজ নেই। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে এই প্রতিষ্ঠান চালু করা হয়েছে, যাতে তাদের পরিবার অন্তত ন্যূনতমভাবে টিকে থাকতে পারে। আমরা আহ্বান জানাই— সবাই যেন এখানে কেনাকাটা করেন।”

আরও পড়ুন: সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও স্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সিআইডির মামলা

তিনি আরও বলেন, “আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় এলে গুমের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে।”

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত পরিবারগুলো নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বিচার দাবি করেন।

মো. পারভেজ হোসেন: ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর শাহবাগ থেকে গুম হন। স্ত্রী ফারজানা আক্তার বলেন, “প্রতিদিন তার জন্য অপেক্ষা করি। সন্তানদের নিয়ে একা জীবন চালাতে হচ্ছে। আমরা ন্যায়বিচার চাই।”

সেলিম রেজা পিন্টু: সূত্রাপুর থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। ২০১৩ সালের ১১ ডিসেম্বর গুম হন। বড় ভাই ইসলাম রেজা বলেন, “মায়ের চোখের পানি এখনো থামেনি। আমরা শুধু চাই, সত্য প্রকাশ হোক।”

মো. মাহফুজুর রহমান সোহেল: বংশাল থানা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি। তার মেয়ে সাদিকা সরকার শাফা কাঁদতে কাঁদতে বলে, “আমার বন্ধুদের বাবা আছে, কিন্তু আমার বাবা নেই। আমি শুধু চাই বাবাকে ফিরে পেতে।”

মো. চঞ্চল কাজী: বংশাল থানা ছাত্রদলের সদস্য। স্ত্রী রেশমা আক্তার বলেন, “স্বামীর অনিশ্চিত ভাগ্যের কথা ভেবে দিন কাটে ভয়ে আর শোকে। আমরা বিচার চাই।”

হাবিবুল বাসার জহির: বংশাল থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। পরিবারের ভাষ্য, “একসঙ্গে চারজনকে তুলে নেওয়ার পর থেকে তাদের কোনো খোঁজ নেই।”

মো. সম্রাট মোল্লা: সূত্রাপুর থানা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। পরিবারের দাবি, “স্বাভাবিকভাবে বের হলেও আর ফেরেননি। আমরা বিচার চাই।”

খালেদ হাসান সোহেল: সূত্রাপুর থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। পরিবারের বক্তব্য, “সেদিন থেকে ঘরে শুধু কান্না। কোনো জবাব মেলেনি।”

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, বংশাল থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও যুবদল নেতা অ্যাডভোকেট মো. রাশেদ, বংশাল থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান দিপু, ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব এমএ মান্নান হীরা, সাবেক সদস্যসচিব শামসুর রহমান রকিব, কোতোয়ালি থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক দ্বীন ইসলাম, কোতোয়ালি থানা যুবদল নেতা রায়হান সেন্টু, যুবদল নেতা মো. পারভেজসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।