ফ্যাসিবাদ দূর করেছি, তামাকও দূর করা সম্ভব: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “ফ্যাসিবাদের মতো কঠিন রোগ বাংলাদেশ থেকে সড়াতে পেরেছি, তামাক দূর করতে পারব না কেন?” তিনি জানান, তরুণদের লক্ষ্য করেই তামাক কোম্পানিগুলো নানা কৌশল সাজায়। কারণ, ২০ থেকে ২৫ বছর বয়সী ছেলে-মেয়েদের যদি তামাকে আসক্ত করা যায়, তবে তারা দীর্ঘদিন ধরে সিগারেটের বাজার নিশ্চিত করতে পারে।
আজ (বুধবার) বিকালে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে নারী মৈত্রী আয়োজিত “নারী, শিশু ও তরুণদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার গুরুত্ব” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: টয়লেট পরিচালনা প্রশিক্ষণে বিদেশ যাচ্ছেন ৩ কর্মকর্তা
উপদেষ্টা বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীগুলো ক্যাবিনেটে তুলেছে। কিন্তু রাজস্ব কমে যাবে–এই অজুহাতে প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত হচ্ছে। তামাক কোম্পানির শক্তিশালী লবিংয়ের কারণেই অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো দাবি করে যে রাজস্ব ছাড়া সরকার চলতে পারবে না, অথচ তাদের প্রদেয় আয়করের মধ্যে বহু ফাঁকি রয়ে গেছে। তরুণ সমাজ সচেতন হলে আর কোনো তামাক কোম্পানি তাদের টার্গেট করতে পারবে না।
আরও পড়ুন: ৩৯ পরিদর্শককে সহকারী পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি
সভায় জানানো হয়, বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০৫ (সংশোধিত ২০১৩) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসি চুক্তির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ বেশ কিছু সংশোধনীর প্রস্তাব দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বা স্মোকিং জোন নিষিদ্ধকরণ, সকল ধরনের তামাকজাত পণ্যের প্রদর্শন ও বিজ্ঞাপন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে তরুণদের রক্ষা করা, বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি বন্ধ করা, তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কের সচিত্র সতর্কবার্তা শতকরা ৯০ ভাগে উন্নীত করা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলি। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শেখ মোমেনা মনি, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক এবং জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মহাপরিচালক মো. আখতারউজ-জামান।
এছাড়া তামাকবিরোধী মায়েদের ফোরাম, শিক্ষক ফোরাম, ইয়ুথ ফোরামসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।