ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে আইনের শাসনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই: সিইসি

Any Akter
বাংলাবাজার রিপোর্ট
প্রকাশিত: ২:৪৯ অপরাহ্ন, ১১ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন, ১২ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনের শাসন কাকে বলে তা দেশবাসীকে দেখাতে চান তারা। শনিবার (১১ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রামে ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়া সংক্রান্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সিইসি বলেন, আজকের এই কর্মশালা থেকে আমাদের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ উঠে আসবে। আমরা সব জানি না, তাই অভিজ্ঞদের কাছ থেকে শিখছি। পূর্ববর্তী নির্বাচনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে যেখানে ঘাটতি আছে, তা পূরণ করার চেষ্টা করছি। আমাদের দ্রুত কাজ করতে হচ্ছে, চ্যালেঞ্জও অনেক।

আরও পড়ুন: বিচারকদেরও জবাবদিহিতা থাকা উচিত: ট্রাইব্যুনালের অভিমত

তিনি আরও বলেন, আমরা চাই একটি ‘এমপাওয়ার্ড’ প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার এবং রিটার্নিং অফিসার গড়ে তুলতে। আপনাদের হাতে সব ধরনের ক্ষমতা দিচ্ছি। কিন্তু আপনি যদি সেই ক্ষমতা ব্যবহার না করেন, সেটিকে আমরা দায়িত্বহীনতা হিসেবে দেখব। ক্ষমতা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তার সঠিক ব্যবহারও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, “আইনের শাসন কাকে বলে, আমরা এই নির্বাচনের মাধ্যমে সেটা দেখাতে চাই। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনারা আইনের মধ্যে থেকে দায়িত্ব পালন করবেন, নির্বাচন কমিশন আপনাদের পূর্ণ সমর্থন দিয়ে যাবে—এই নিশ্চয়তা দিচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য একটি স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করা। এজন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

আরও পড়ুন: রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

সিইসি জানান, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে বিভিন্ন পেশার মানুষ—যাদের কেউ কেউ আগে কখনো ভোটগ্রহণের অভিজ্ঞতা পাননি—তারা দায়িত্ব পালনে দক্ষ হয়ে ওঠেন। তিনি বলেন, “ওয়ান সাইজ ফিটস অল পদ্ধতিতে নয়, বরং অংশগ্রহণকারীদের পটভূমি বিবেচনায় প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “ভোটগ্রহণকেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসারই হবেন সেই কেন্দ্রের চিফ ইলেকশন অফিসার। আইন অনুযায়ী সব ধরনের ক্ষমতা প্রয়োগের দায়িত্ব তার ওপরই থাকবে। প্রয়োজনে ভোটকেন্দ্র স্থগিত করুন, আইন প্রয়োগ করুন, তবে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে সাহসের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করুন।”

বাংলাদেশের নির্বাচনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ নিরাপত্তা উল্লেখ করে সিইসি বলেন, “প্রশাসনিক, আইনগত ও প্রযুক্তিগত নানা চ্যালেঞ্জ থাকলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনাই সবচেয়ে কঠিন বিষয়।” এজন্য তিনি প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি আরও জানান, নির্বাচন কমিশন একটি ‘সেন্ট্রাল কো-অর্ডিনেশন সেল’ এবং ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স ইউনিট’ গঠন করছে, যাতে দেশের যেকোনো স্থান থেকে দ্রুত যোগাযোগ ও ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। “একটি সফল নির্বাচন আয়োজনের মূল চাবিকাঠি হলো সমন্বয়, উল্লেখ করে সিইসি বলেন, প্রিজাইডিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসার, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে কার্যকর সমন্বয়ই নির্বাচনের সাফল্য নিশ্চিত করবে।

এছাড়া, সিইসি জানান যে নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া তথ্য ও এআই-ভিত্তিক অপপ্রচার মোকাবিলায় একটি সেল গঠন করেছে। তিনি বলেন, “সেলের কার্যক্রম সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে আমরা শিগগিরই প্রচার কার্যক্রম জোরদার করব।