ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থার উন্নতি নেই, ব্রেন কন্ডিশন ‘খুবই খারাপ’
গুলিবিদ্ধ ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থার এখনও দৃশ্যমান কোনো উন্নতি হয়নি। তার চিকিৎসায় গঠিত মাল্টিডিসিপ্লিনারি মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা জানিয়েছেন, বিশেষ করে মস্তিষ্কের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ এবং ক্লিনিক্যালি তিনি আগের মতোই আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে মেডিকেল বোর্ডের জরুরি বৈঠক শেষে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক এসব তথ্য জানান। সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: হাদির ওপর হামলাকারীরা ভারতে ঢুকলে গ্রেপ্তার করে ফেরত পাঠানোর আহ্বান ঢাকার
চিকিৎসক জানান, বোর্ড মিটিংয়ের আগেই ওসমান হাদির রিপিট সিটি স্ক্যান করা হয়। সর্বশেষ সিটি স্ক্যানে তার মস্তিষ্কে ব্যাপক ইডেমা (পানি জমা) ও অক্সিজেনের ঘাটতি ধরা পড়েছে, যা ব্রেনের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। পাশাপাশি মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে ছিটা ছিটা রক্ত জমাট বাঁধার লক্ষণ পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে হাদির ব্রেন কন্ডিশন অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় রয়েছে।
চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, হাদির ফুসফুসের অবস্থা আগের মতোই অপরিবর্তিত রয়েছে এবং বর্তমানে লাইফ সাপোর্টের মাধ্যমে তার শ্বাসপ্রশ্বাস চালু রাখা হয়েছে। তবে কিছুটা স্বস্তির বিষয় হলো, তার কিডনির কার্যকারিতা এখনো স্বাভাবিক রয়েছে। দৈনিক প্রায় চার লিটার ইউরিন আউটপুটের ভিত্তিতে তার ফ্লুইড ব্যালেন্স করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: হাদিকে হত্যাচেষ্টা: মোটরসাইকেল মালিক হান্নান ৩ দিনের রিমান্ডে
চিকিৎসক আরও জানান, এর আগে রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তক্ষরণের ভারসাম্যহীনতা থেকে যে ডিসিমিনেটেড ইনট্রাভাসকুলার কোয়াগুলেশন (ডিআইসি) দেখা দিয়েছিল, সেটির অবস্থাও বর্তমানে অপরিবর্তিত রয়েছে। নতুন করে কোনো জটিলতা তৈরি হয়নি।
তবে চিকিৎসকদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগের জায়গা এখনো মস্তিষ্ক। ব্রেন স্টেম ইনজুরি গুরুতর অবস্থায় রয়েছে। পাশাপাশি যেদিক দিয়ে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল, তার বিপরীত পাশ দিয়ে মস্তিষ্ক সামান্য বাইরে দিকে চাপ দিচ্ছে—যা চিকিৎসকদের উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে।
বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে চিকিৎসক বলেন, ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে একটি কেস সামারি প্রস্তুত করা হয়েছে। বিদেশের কোনো হাসপাতাল ওই কেস সামারি পর্যালোচনা করে রোগীকে গ্রহণে সম্মত হলে তবেই বিদেশে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আসবে।
তিনি জানান, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর কিংবা অন্য কোনো দেশে নেওয়া হবে—এ বিষয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। পাশাপাশি রোগীকে বিদেশে স্থানান্তরের মতো শারীরিক স্থিতিশীলতা রয়েছে কি না, সেটিও বড় প্রশ্ন হয়ে রয়েছে।





