ঢাকায় “বিজ্ঞান ও সমাজের সেতুবন্ধন: জাতীয় উন্নয়নে পরমাণু শক্তি কেন্দ্র, ঢাকার সেবা ও সমাধান” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

Any Akter
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:২০ পূর্বাহ্ন, ১৯ জুন ২০২৫ | আপডেট: ৫:৩০ পূর্বাহ্ন, ১৯ জুন ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

পরমাণু শক্তি কেন্দ্র, ঢাকা কর্তৃক আয়োজিত “Bridging Science and Society: Services and Solutions from Atomic Energy Centre, Dhaka for National Development” (বিজ্ঞান ও সমাজের সেতুবন্ধন: জাতীয় উন্নয়নে পরমাণু শক্তি কেন্দ্র, ঢাকার সেবা ও সমাধান) শীর্ষক এক সেমিনার বুধবার (১৮ জুন) সকাল ১০টায় শাহবাগস্থ পরমাণু শক্তি কেন্দ্রের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোঃ কামরুল হুদা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আব্দুস সালাম।

আরও পড়ুন: মাইলস্টোনে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত: দগ্ধ শিক্ষার্থী জারিফের মৃত্যু, নিহত বেড়ে ৩৪

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরমাণু শক্তি কেন্দ্র, ঢাকার প্রাক্তন পরিচালক ও বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত সদস্য (পরিকল্পনা) ড. শামশাদ বেগম কোরাইশী। তিনি একইসঙ্গে সেমিনারে সভাপতিত্বও করেন। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বস্তু বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. প্রকৌশলী শেখ মন্জুরা হক।

সেমিনারে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক বিভাগের সেবা ও গবেষণা কার্যক্রম তুলে ধরেন রসায়ন বিভাগের প্রধান ড. ইয়াসমিন নাহার জলি, স্বাস্থ্য পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান সেলিনা ইয়াসমীন, পরীক্ষণ পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. কাজী মোঃ আমজাদ হোসেন, এবং নন-ডেস্ট্রাক্টিভ টেস্টিং বিভাগের প্রধান মোঃ সাইফুল আলম।

আরও পড়ুন: হাতিরঝিলে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে' প্যানটোনিক্স টাইগার রান ঢাকা ২০২৫'

১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত পরমাণু শক্তি কেন্দ্র, ঢাকা (এইসিডি) বর্তমানে স্বাস্থ্য, পরিবেশ, শিল্প, কৃষি, ও বাণিজ্য খাতে গবেষণা ও সেবা প্রদান করছে। গবেষণা কার্যক্রম ১০টি বৈজ্ঞানিক বিভাগে পরিচালিত হয়, যেখানে ৬০ জন বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীসহ মোট ২১০ জন কর্মী কাজ করছেন।

এইসিডি’র উল্লেখযোগ্য সেবাসমূহের মধ্যে রয়েছে খাদ্য, পানি ও স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট নমুনা বিশ্লেষণ, রেডিওঅ্যাকটিভ উপাদানের উপস্থিতি নির্ধারণ, বিকিরণ প্রযুক্তির মাধ্যমে গুণমান নিয়ন্ত্রণ ,জনস্বাস্থ্য নিরাপত্তায় গবেষণালব্ধ সমাধান, অলঙ্কারের ধাতব বিশুদ্ধতা নির্ধারণ, আর্সেনিকোসিস শনাক্তে মানব চুলে আর্সেনিক পরীক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণার মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি তৈরি।

মূল প্রবন্ধে ড. শামশাদ বেগম কোরাইশী বলেন, পরমাণু শক্তি কেন্দ্রের গবেষণা ও সেবাসমূহ বিজ্ঞান ও সমাজের মধ্যে কার্যকর সেতুবন্ধন তৈরি করছে, যা দেশের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

বিশেষ অতিথি প্রফেসর ড. আব্দুস সালাম বলেন, ১৯৯৬-৯৭ সালে ঢাকার বাতাসে সীসা দূষণের বিষয়টি প্রথম প্রকাশ করে পরমাণু শক্তি কমিশনের বিজ্ঞানীরাই, যার ভিত্তিতে গ্যাসোলিনে লেড নিষিদ্ধ হয়। পরবর্তীতে বাতাসে লেডের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। তবে বর্তমানে ব্যাটারির অসচেতন ব্যবহারে এই দূষণ আবারও বাড়ছে।

প্রধান অতিথি ড. মোঃ কামরুল হুদা বলেন, পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পরমাণু শক্তি কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা গবেষণায় এবং জনগণকে সেবা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই অর্জনের অংশীদার শুধু বিজ্ঞানীরা নন, বরং সকল স্টেকহোল্ডারও।

দিনব্যাপী সেমিনারে অংশ নেন পরমাণু শক্তি কমিশনের বিভিন্ন বিভাগের পরিচালক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা, চিকিৎসক, গবেষক এবং শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।