দেশে অর্থনীতির করুন অবস্থা চলছে, দুর্ভিক্ষের আলামত দেখতে পাচ্ছি : রিজভী

Sadek Ali
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:৪৬ অপরাহ্ন, ১১ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ১১:৪৩ অপরাহ্ন, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

দেশে অর্থনীতির কঠিন করুন অবস্থা চলছে উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন,’এটা শুধু মুখের কথা নয় সামনে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে দেশে দুর্ভিক্ষ হয় কিনা এইটা এখন মানুষের মনে মনে। দুর্ভিক্ষের আলামত যদি আমরা দেখতে পাই শুনতে পাই তাহলে তো জনগণ আমাদেরকে ছেড়ে দেবে না।

শুক্রবার  (১১ জুলাই) সকালে নাপল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয় সামনে জিয়া পরিষদের উদ্যোগে সংগঠনের সভাপতি বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল কুদ্দুসের রোগ মুক্তি কামনায় দুঃস্থদের মাঝে জায়নামাজ বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন: অসহায় পরিবারের দুই শিশুকে চিকিৎসা সহায়তা ও অটোরিকশা দিলেন তারেক রহমান

বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে বৃহত্তর আদর্শের জন্য লড়াই করছে মন্তব্য করে দলটির এই মুখপাত্র বলেন,’ আমরা বৃহত্তর আদর্শের জন্য লড়াই করছি।আমরা মানবিক সাম্য ন্যায় বিচারের জন্য লড়াই করছি।আমরা আইনের শাসনের জন্য লড়াই করছি যার জন্য দরকার চিরায়ত গণতন্ত্র প্রকৃত গণতন্ত্র খাটি গণতন্ত্র। এটা বৃহত্তর আদর্শের লড়াই যেখানে জনগণের মালিকানা জনগণ ফিরে পাবে।সেই মালিকানা আটকে রাখা তো বড় ধরনের ফ্যাসিবাদকে প্রশ্রয় দেয়া।

রিজভী বলেন,’জনগণের সরকার ক্ষমতায় থাকলে প্রতিটি পদে পদে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয় সেই জবাবদিহিতা এখন নেই।অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও আমরা মনে করি জনসমর্থিত কারণ সমস্ত রাজনৈতিক দল শুধু আওয়ামী লীগ আর তাদের কয়েকটি দোসর ছাড়া সবাই এই সরকারকে সমর্থন করেছে। ড.মোহাম্মদ ইউনুস সাহেবকে আমরা সবাই সমর্থন করে যাচ্ছি।কিন্তু এটাও তো ঠিক দুর্ভিক্ষের আলামত যদি আমরা দেখতে পাই, শুনতে পাই তাহলে তো জনগণ আমাদেরকে ছেড়ে দেবে না।

আরও পড়ুন: একটি গোষ্ঠী মব সন্ত্রাসকে ক্যানসারে পরিণত করেছে: রিজভী

তিনি বলেন,’আজকে প্রায় অসংখ্য গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মানুষ কর্মহীন হচ্ছে।মানুষ যদি খাবার কিনতে না পারে তাহলে কিন্তু দুর্ভিক্ষের আলামত তৈরি হবে এবং এই আলামত তৈরি হলে কেউ-ই কিন্তু রেহাই পাবে না আর হাততালি দিবে ওই পতিত ফ্যাসিস্টরা।

রিজভী বলেন, ’যে দোসরা ব্যাংকের হাজার কোটি টাকা মেরে বিদেশে পাচার করেছে তাদের সাথে নামে মাত্র কিছু প্রতিষ্ঠান একই কাজ করেছে।সরকার ইচ্ছা করলে এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রশাসক নিয়োগ করে সেই প্রতিষ্ঠানগুলো চালাতে পারে। গার্মেন্টস গুলো যাতে বন্ধ না হয় সরকার এটাকে নানাভাবে টেকওভার করতে পারে।দোসররা থেকে থাকলে তাদের বিচার করুন।শ্রমিকদের কলকারখানা যেন বন্ধ না হয় কারণ অর্থনীতির কঠিন করুন অবস্থা। এটা শুধু মুখের কথা নয় সামনে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে দেশে দুর্ভিক্ষ হয় কিনা এইটা এখন মানুষের মনে মনে। আর্থিক শৃঙ্খলা ফেরাতে হবে এটা ঠিক কিন্তু পাশাপাশি কর্মসংস্থান বৃদ্ধি না করলে জনগণের কাছে কেউ-ই রেহাই পাবেন না জনগণ কিন্তু এটা ছেড়ে দেবে না। এই কথাগুলো ভাবুন এই কথাগুলো চিন্তা করুন শুধু শিশুদের মত ওই চকলেট আমাকে পেতেই হবে আমাকে ওই খেলনা টা দিতেই হবে এইরকম গো ধরে থাকলে পারে হবে না। এতে আমাদের গণতন্ত্রের জন্য সর্বনাশ প্রকৃত গণতন্ত্রের চর্চা মুখ থুবড়ে পড়বে এবং আমরা একটা দীর্ঘস্থায়ী অগণতান্ত্রিক শক্তির কাছে জিম্মি হয়ে পড়বো।

রিজভী বলেন,’বিএনপি’র পক্ষ থেকে তো সংস্কার বিরোধী কোন কথা বলা হয়নি সংস্কারের পক্ষেই বলা হয়েছে।আপনারা যে সংস্কারের কথা বলছেন বিএনপির ৩১ দফার মধ্যে প্রায় অনেক জিনিসই প্রতিফলিত হয়েছে।জুলাই সনদদের অনেক বিষয় বিএনপি গ্রহণ করেছে। কিন্তু এটি মূলনীতির মধ্যে নিতে হবে কেন?যুগে যুগে দেশে দেশে আরো সংস্কার হবে।সংস্কার কোন থাই পর্বত মালার মত স্থির কোন বিষয় নয় সংস্কার একটি গতিশীল ব্যাপার।সমাজ এবং রাষ্ট্রে যখন যেটির প্রয়োজন হবে গণতন্ত্রের স্বার্থে রাষ্ট্রের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে তখনই সংস্কার করে সেই আইন প্রণয়ন হবে।এটাই তো গণতান্ত্রিক সংবিধানের নিয়ম কিন্তু এটাকে মূলনীতির মধ্যে নিতে হবে আগে সংস্কার এগুলো বলে তো বিভ্রান্ত ছড়ানো হচ্ছে। এতে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্ত তৈরি হচ্ছে।কেন আপনারা জনগণকে এভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন? এটা না করে আমরা যেটি বলেছি জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফেরত দেন এটাই সবচাইতে বড় কাজ। এটাই তো ১৬ বছর শেখ হাসিনা বন্ধ করে রেখেছিলেন।দরজায় খিল দিয়ে রেখেছিলেন সেই বন্ধ দরজা আমাদের এখন খুলতে হবে সেটি খোলার জন্য জনগণকে ফিরিয়ে দিতে হবে তার ক্ষমতা অর্থাৎ তার মনোনীত সরকার গঠন করতে হবে।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ,স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু,জিয়া পরিষদের সিনিয়র সহ সভাপতি ড. শফিকুল ইসলাম মহাসচিব ড. এমতাজ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আব্দল্লাহহিল মাছুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম, সদস্য সচিব মো. মোয়াজ্জেম হোসেন জিয়া পরিষদ ডেসকো শাখা, যুগ্ম আহবায়ক শামসুল প্রমুখ।