গ্রাম থেকে গ্লোবাল-ফ্রিল্যান্সিং শিখে বদলে ফেলুন নিজের ভাগ্য

Any Akter
পারভেজ আহমেদ, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও উদ্যোক্তা
প্রকাশিত: ৩:৪৯ অপরাহ্ন, ০২ অগাস্ট ২০২৫ | আপডেট: ১:২৭ অপরাহ্ন, ১৬ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

গ্রামে বসে আয় করা? সেটা কি আদৌ সম্ভব?

হ্যাঁ, এখন আর শুধু শহর য়-গ্রামের উঠোন থেকেই আপনি আয় করতে পারেন মাসে হাজার, এমনকি লাখ টাকা! ইন্টারনেট আর দক্ষতা থাকলেই ঘরে বসে উপার্জনের নতুন দুয়ার খুলে যায়। ফ্রিল্যান্সিং এখন শুধু ট্রেন্ড নয়-এটা গ্রামীণ অর্থনীতির ভবিষ্যৎ।

আরও পড়ুন: নির্বাচনে অপতথ্য রোধে ইসির সঙ্গে কাজ করবে টিকটক

ফ্রিল্যান্সিং মানে কী?

ফ্রিল্যান্সিং মানে হচ্ছে নিজের দক্ষতা দিয়ে দেশ-বিদেশের ক্লায়েন্টের কাজ করে আয় করা। আপনি হতে পারেন একজন ডিজাইনার, ভিডিও এডিটর, ডেটা এন্ট্রি অপারেটর, কনটেন্ট রাইটার কিংবা ওয়েব ডেভেলপার।

আরও পড়ুন: আধুনিক দন্ত চিকিৎসায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উদ্ভাবন ও প্রয়োগ বিষয়ক আন্তর্জাতিক কংগ্রেস অনুষ্ঠিত

গ্রামে বসে আয় করার ৭টি ইউনিক কৌশল:

. লোকাল রিসোর্স দিয়ে স্মার্ট স্কিল শিখুন

গ্রামের একজন তরুণ যদি মোবাইলেই ইউটিউব দেখে গরুর খামার করে, তাহলে কেন আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং বা গ্রাফিক ডিজাইন শিখবেন না? প্ল্যান করুন-প্রতিদিন ঘন্টা স্মার্টফোনে ইউডেমি, কোরদেরা বা ইউটিউব দেখে শিখুন।

. ইন্টারনেট না থাকলেও চালিয়ে নিন

নেট না থাকলে? সমস্যা ন্যা! বাজারে এখন ২০ টাকায় জিবি অফার পাওয়া যায়। আর বড় কাজ ফাইনাল করতে স্থানীয় স্কুল যা দোকানের Wi-Fi ব্যবহার করলেও আপত্তি নেই।

. লোকাল ক্লায়েন্ট দিয়ে শুরু করুন

প্রথমেই Fiverr বা Upwork না ধরেও পারেন-নিজের ইউনিয়ন পরিষদ, দোকানদার, কিংবা কোচিং সেন্টারের জন্য ফেসবুক পেজ খুলে দেওয়া, ব্যানার ডিজাইন করা এসব দিয়েই শুরু করুন।

. ছোট টিম বানান, বড় কাজ ধরুন

একাই সব শিখে লাভ নেই-আপনার বন্ধুরা ডেটা এন্ট্রি আনে, আপনি আনেন ডিজাইন, আরেকজন দেখে ভালো-তাহলে টিম বানিয়ে কাজ ভাগ করুন। কাজের মান বাড়বে, আয়ও বাড়বে।

. লোকাল ভাষার কনটেন্ট তৈরি করুন

বাংলা ভাষায় টিউটোরিয়াল বা সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট তৈরি করে ফেসবুক/ইউটিউব মনিটাইজেশন চালু করুন। দেশি র‍্যান্ডরা এখন গ্রামীণ ভাষার ভিডিওতেই বেশি আগ্রহী।

. "গ্রামীণ ফ্রিল্যান্সিং ক্লাবচালু করুন

নিজের এলাকায় একটি ঘোট ক্লাব খুলে, সপ্তাহে দিন একত্রে শেখার বা অনুশীলনের আয্যেজন করুন। একসাথে শিখলে আগ্রহ বাড়ে, মানও বাড়ে। এতে গ্রামের মানুষও আপনাকে সম্মান করবে।

. বিদেশি কৃষিপণ্য রিসার্চ করে কনটেন্ট তৈরি করুন

আপনি কৃষিপ্রধান এলাকায় থাকেন, তাই "ট্রেন্ডি" কৃষি প্রোডাক্ট নিয়ে গবেষণা করে টিকটক বা ইউটিউব ভিডিও তৈরি করতে পারেন। বিদেশি ভিউয়ার পেলে আপনি হয়ে যাবেন ভাইরালা

শুরু করবেন কীভাবে?

১. মোবাইল বা কম্পিউটার (যদি না থাকে, কোথাও থেকে ধা নিন)।

২. ইন্টারনেট (রাতের অফ-পিক সময় সবচেয়ে সস্তা)।

৩.একটি ডিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে প্রোফাইল (Fiverr, Freelancer, PeoplePerHour)।

৪. প্রতিদিন কমপক্ষে  ঘণ্টা শেখা চর্চা।

শেষ কথা:

গ্রামের ছেলে-মেয়েরা এখন আর পিছিয়ে নেই। শুধু প্রয়োজন আগ্রহ আর ধৈর্য। সরকার, এনজিও, আর প্রবাসী ভাইদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিন-তারা আজ যে জায়গায়, আপনিও সেখানে পৌছাতে পারেন। শুধু নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন।

আপনার শেখা যদি অন্য কাউকে শেখাতে পারেন, তবেই আপনি সত্যিকারের সফল। আজ থেকেই শুরু করুন- আগামী বছর এই সময় আপনি নিজেই হবেন প্রেরণার উৎস।

লেখক: পারভেজ আহমেদ, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও উদ্যোক্তা