প্রতিকারের আশায় গাজীপুর সিটি মেয়রের বাসায় হাজারো পোশাক শ্রমিক

তারিখ দিয়েও বেতন-ভাতা পরিশোধ না করা এবং কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে এসবের প্রতিকার পাওয়ার আশায় শনিবার দুপুরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়রের বাসার সামনে অবস্থান নেয় একটি কারখানার হাজারো শ্রমিক। বিএইচআইএস আ্যপারেলস নামের
কারখানাটি টঙ্গীর দত্তপাড়ার হোসেন মার্কেট এলাকার অবস্থিত। ওই কারখানার শ্রমিকরা দাবি দাওয়া নিয়ে প্রায় প্রায় ৬ কিলোমিটার হেটে গাজীপুর মহানগরের হারিকেন এলাকায় মেয়রের বাসার সামনে ঢাকা-গাজীপুর মহাসড়কে অবস্থান নেয়। পরে মেয়র জায়েদা খাতুনের উপদেষ্টা
আরও পড়ুন: সাদা পাথর রক্ষায় প্রশাসনের ৫ দফা সিদ্ধান্ত
সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম সমস্যা সমাধানের আশ^াস দিলে বেলা আড়াইটার দিকে শ্রমিকরা অবস্থান তুলে নেয়। শ্রমিকরা জানায়, তাদের এপ্রিল মাসের বেতন কয়েক দফা তারিখ দিয়ে পরিশেধ করেনি কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার বেতন পরিশোধের তারিখ ছিল। কিন্তু ওই দিন কর্তৃপক্ষের কেউ কারখানায় আসেনি, বেতনও পরিশোধ করা হয়নি। পরে সন্ধ্যায় শ্রমিকরা হোসেন মার্কেট এলাকায় ওই মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। পরে পুলিশের অনুরোধে রাত ৮টার দিকে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেয়। শ্রমিকদের অভিযোগ, কারখানাটিতে ৩ হাজার শ্রমিক ছিল। গত রমজান মাস থেকে এ পর্যন্ত বেশ কিছু শ্রমিককে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে।
চাকুরিচ্যুতদের প্রাপ্য ভাতাদিও দেওয়া হয়নি। এক মাসের বেতন আরেক মাসে দেওয়া হয়। বাধ্যতামূলক অতিরিক্ত ৪-৫ ঘন্টা কাজ করানো হলেও অভারটাইম ও টিফিন দেওয়া হয়না। চাকুরির বয়স বেশী হলে বা নারী শ্রমিক গর্ভবতী হলে ভাতা না দিয়ে চাকুরি থেকে বের করে দেওয়া হয়। সপ্তাহিক ছুটির দিনেও কাজ করানো হয়। প্রতিবাদ করলে যখন-তখন কারখানা থেকে বের করাসহ বাইরে থেকে লোক এনে নির্যাতন চালানো হয়।
আরও পড়ুন: পাবনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা পরিবহণ ধর্মঘট প্রত্যাহার
তারা বলেন, এপ্রিল ও চলতি মে মাসের বেতন এবং আসন্ন ঈদের বোনাসের নিশ্চয়তা নেই। সামনে ঈদ। তাই উপায় না পেয়ে প্রতিকারের আশায় তারা মেয়র জায়েদা খাতুনের বাসার সামনে আশ্রয় নিয়েছেন। মেয়রের পক্ষে তার উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম শ্রমিকদের সমস্যার কথা শুনে মালিক পক্ষের সাথে আলোচনা করে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ^াস দিয়েছেন।
মেয়রের উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শ্রমিকদের সামনেই কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। আগামী ২৩ মে বেতন পরিশোধের আশ^াস দিয়েছেন। অন্য সমস্যাগুলোরও সমাধান করা হবে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো. মোশারফ হোসেন জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ এপ্রিলের ১৫ দিনের বেতন পরিশোধ করেছে। বাকী ১৫ দিনের বেতন আগামী সপ্তাহে পরিশোধের কথা রয়েছে।
কারখানার প্রোডাকশন ম্যানেজার অনিক ইসলাম কাঞ্চন বলেন, শ্রমিকদের নির্য়াতনের অভিযোগ সঠিক নয়। শ্রমিকদের টিফিন দেওয়া হয়, তবে মাঝেমধ্যে একটু বিলম্ব হয়ে থাকে। তিনি আরো বলেন, শিপমেন্ট জটিলতার কারণে বেতন পরিশোধে সমস্যা হয়েছে। শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে আন্দোলন শুরু করে। আগামী ২৩ মে শ্রমিকদের বাকি বেতন পরিশোধ করা হবে জানান তিনি।