টাঙ্গাইলের সখীপুরে ভোটের মাঠে আপন দুই ভায়রার লড়াই

Abid Rayhan Jaki
শফিকুজ্জামান খান মোস্তফা,টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৮:০৭ অপরাহ্ন, ০৩ জুন ২০২৪ | আপডেট: ৫:২৮ পূর্বাহ্ন, ১৪ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

আগামী ৫ জুন টাঙ্গাইলের সখীপুরে চতুর্থ ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন আপন দুই ভায়রা। দুই ভায়রা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হওয়াতে দুচিন্তা ও বিপাকে পড়েছেন আত্মীয়-স্বজনরা। স্থানীয় ভোটারদের মাঝে দেখা দিয়েছে নানা কৌতূহল। প্রার্থীরা হলেন- সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের দুইবারের সাবেক চেয়ারম্যান শওকত শিকদার। অন্যজন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য, উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও বোয়ালী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সাঈদ আজাদ।

জানা যায়, শওকত শিকদার (কাপ-পিরিচ) ও সাঈদ আজাদ (আনারস) প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠে লড়াই করছেন। তাদের এই বৈরী সম্পর্ক উত্তাপ ছড়াচ্ছে ভোটের মাঠে। দুই ভায়রার মধ্যে কে হারে, কে জিতে তা নিয়ে ভোটারদের মাঝেও চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। স্থানীয় ভোটার সোহান শিকদার বলেন, তারা দুই ভায়রাই আমাদের আত্মীয়। কাকে ভোট দিব, এ নিয়ে খুবই দুচিন্তায় পড়ে গিয়েছি। আমার মতো আরও অনেকেই বিব্রত ও বিপাকে পড়েছেন। শেষ মূহুর্তে যার মাঠ ভালো দেখবো তাকে ভোট দিব ভাবতেছি। হারুন মিয়া নামে আওয়ামী লীগের এক কর্মী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। নির্বাচনে কোন দলীয় প্রতীক নেই। সেজন্য প্রার্থী বিবেচনা করে আমাদের ভোট দিতে হবে। এলাকার উন্নয়ন করবে, জনগণের ডাকে সাড়া দিবে তাকেই আমরা ভোট দিব। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েক নেতা বলেন, তারা দু’জনেই আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা। শওকত শিকদার এর আগে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, দুইবার চেয়ারম্যান ছিলেন, বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। অপরদিকে সাঈদ আজাদ দলের জন্য কাজ করেই গেছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত কিছু হতে পারেনি। তাকে সবাই ব্যবহার করেছেন, কেউ তার কাজের মূল্যায়ন করেনি। গোপনে আমিসহ আরও আওয়ামী লীগের নেতারা সাঈদ আজাদের জন্য কাজ করছি। এবার বিপুল ভোটে সাঈদ আজাদ বিজয়ী হবেন। স্থানীয় ভোটার সুজন মিয়া বলেন, আমাদের পাশে যাকে সব সময় পাবো, যে আমাদের সখীপুর উপজেলার উন্নয়ন করবে তাকেই আমরা ভোট দিব।

আরও পড়ুন: সাদা পাথর রক্ষায় প্রশাসনের ৫ দফা সিদ্ধান্ত

এছাড়াও চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যাপক রফিক-ই-রাসেল (হেলিকপ্টার), টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সদস্য আলমগীর হোসেন চান (মোটরসাইকেল), উপজেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র সানোয়ার হোসেন সজীব (গামছা) ও উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি (বহিষ্কৃত) ফারুক হোসেন (ঘোড়া)।

চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যক্ষ সাঈদ আজাদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিয়েছেন বিধায় আমার মতো দীর্ঘদিনের আওয়ামী লীগের পরিক্ষীত একজন কর্মী হিসেবে আমার জন্য খুব সহজ হয়েছে। সখীপুরের জনগণের জন্যও খুব সহজ বিষয় হয়েছে। আমার (আনারস) প্রতীকের পক্ষে আজ সখীপুরের মানুষ দল-মত নির্বিশেষ সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে আমি বিপুল ভোটে জয়ী হবো।

আরও পড়ুন: ‎পাবনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা পরিবহণ ধর্মঘট প্রত্যাহার

অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী শওকত শিকদার বলেন, সখীপুরের জনগণ আমাকে ভালোবেসে দুইবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছিলেন। সখীপুরের জনগণ ও দলের নেতাকর্মীরা ঐকবদ্ধ আছেন। তারা এবারও বিপুল ভোটে আমাকে জয়যুক্ত করবেন।

সখীপুর উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লক্ষ ৭৬ হাজার ২৭৫ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮০ হাজার ৩২১ জন এবং নারী ভোটার রয়েছে ৯৫ হাজার ৯৫৪ জন।