পাটের উৎপাদন খরচ বাড়লেও দাম বাড়েনি, দুশ্চিন্তায় পাট চাষিরা

Sadek Ali
কাজী আফতাব হোসেন, ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১:৪১ অপরাহ্ন, ০৬ মে ২০২৫ | আপডেট: ৪:৩৮ অপরাহ্ন, ১০ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

বছর যাচ্ছে আর সোনালী আশ খ্যাত পাটের  উৎপাদন খরচও বাড়ছে। সে অনুপাতে বাজারে বাড়ছে না এর দাম। পাট চাষাবাদে খরচের সাথে বিক্রয় মূল্য বেড়ে যাওয়ায়, কৃষকরা উৎপাদন খরচ নিয়ে শঙ্কায় আছেন। গত বছর বাজারে প্রকার ভেদে প্রতি মন পাট ২৫ শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। এতে উৎপাদন ব্যয় আর বিক্রয় মূল্য ছিল সমানে সমান। যে কারণে কৃষকদের চোখে- মুখে ছিল হতাশা। 

পাট উৎপাদনে বরাবরই দেখে শীর্ষ অবস্থানে ফরিদপুর। আর ফরিদপুরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাট উৎপাদিত হয় নগরকান্দা-সালথায়। এবার এ দু’উপজেলায় অন্তত ২৩ হাজার ৭ শ’ ৫৬ হেক্টর জমিতে পাট চাষাবাদ করা হয়েছে। যা মোট কৃষি জমির ৯০ শতাংশ। তবে চলতি মৌসুমে পাটের আবাদের সর্বক্ষেত্রে খরচ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় চাষিরা। তাদের দাবি এবার উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ। তাই পাট উৎপাদন খরচের বাড়তি লাগাম টেনে ধরতে কৃষি বিভাগের সহযোগিতা চান স্থানীয় পাট চাষিরা। 

আরও পড়ুন: ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাতিলের দাবিতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে মানববন্ধন

সারেজমিন গিয়ে দেখা যায়,নগরকান্দা-সালথায় মাঠ থেকে পেঁয়াজ তুলে নেওয়ার পর বর্তমানে পাট আবাদ ও পরিচর্যা  নিয়ে কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। এখন ক্ষেতের পাটের চারা ছয় ইঞ্চি  থেকে ১ এক ফুট লম্বা হয়েছে। যারা আগাম বীজ গোপন করেছিলেন তাদের ১ ফুট  থেকে দুই ফুট পাট লম্বা হয়েছে। বর্তমানে পাট চাষিরা পাটের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত আছেন। 

এবার শুকনো মৌসুমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে পানির দুষ্প্রাপ্রতাসহ পাট চাষের সাথে সম্পৃক্ত প্রায় সকল ধরনের উপকরণ ও শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধি এবং উৎপাদিত পাটের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় সংশ্লিষ্ট সকলের চোখে মুখে হাসি ছিল না। 

আরও পড়ুন: ফের ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম রবি শিক্ষার্থীদের

নগরকান্দা পাট চাষি আব্দুর রহিম জানান, গত কয়েক বছর ধরে ভূগর্ভস্থরের পানির পানির স্তর নিচে নামছে। সংকট এমন পর্যায়ে যে অনেক মেশিনে পানি উঠছে না, আবার কোনটাই স্বল্প পানি  উঠার কারণে জমিতে সেচ দিতে খরচ বেড়েছে প্রায় দুই থেকে  তিনগুণ। সে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সার, কীটনাশক ওষুধসহ বিভিন্ন কৃষি উপকরণের দাম। যে কারণে ব্যয়ের সাথে আয় মিলাতে গিয়ে হিম সিম খেতে হচ্ছে কৃষকদের।

নগরকান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, বীজ বপনের সময় বৃষ্টিপাত না হয়ায় কৃষকদের নিজ খরচে সেচ প্রদান করতে হয়েছে বিধায় উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলে পাট পচানো সমস্যা হবে না। পাটের দাম ভালো পেলে কৃষকরা লাভবান হবে। 

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ শাহাদুজ্জামান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে বৈরী আবহাওয়ায় কারণে অনেক ক্ষেত্রে ব্যয় বৃদ্ধি হতে পারে । তবে আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবং উন্নত জাতের পাট বীজ বপন করতে পারলে, কৃষি উপকরণ সঠিক সময় প্রয়োগ করতে পারলে উৎপাদন বহুগুণ বেড়ে যায়। এতে কৃষকদের ব্যয়ের হার কমবে।