মুন্সীগঞ্জে ৬০ কিলোমিটার পাকা সড়কের বেহাল দশা, পথচারীদের দুর্ভোগ

Sadek Ali
মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ
প্রকাশিত: ১২:৩৮ অপরাহ্ন, ২৭ মে ২০২৫ | আপডেট: ৫:৫৪ অপরাহ্ন, ১০ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার এলাকা, পাড়া ও মহল্লা মিলিয়ে অভ্যন্তরে রয়েছে ৬০ কিলোমিটার পাকা সড়ক। এসব সড়কের বিভিন্ন স্থানের কার্পেটিং উঠে গিয়ে গর্ত আর খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষা মৌসুম শুরু আগেই বৃষ্টিতে সড়কের কার্পেটিং উঠে গেছে। আবার এমনও সড়ক রয়েছে, যা বছর দুয়েক ধরেই বেহাল অবস্থায় রয়েছে। এসব সড়কের কোথাও কোথাও যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ার চিত্র পাওয়া গেছে। 

এমন পরিস্থিতিতে পৌরসভার বিভিন্ন সড়কে যাতায়াতে বিড়ম্বনায় পড়ছেন যাত্রী সাধারণ। পথচারীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। এতে সড়কে ভোগান্তি শহরবাসীর পিছু ছাড়ছে না। দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন সড়কে সংস্কার কাজ না করার অভিযোগ তুলেছেন পৌরবাসী। 

আরও পড়ুন: ইতিহাসের সবচেয়ে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে: প্রেস সচিব

সরেজমিনে ঘুরে পৌরসভার দক্ষিন কোর্টগাঁও এলাকার লিচুতলা থেকে পুরাতন কাচারী হয়ে সুপার মার্কেট পর্যন্ত পুরাতন সড়ক, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে হাটলক্ষীগঞ্জ লঞ্চঘাট, ইসলামী ব্যাংক থেকে পৌর পানি শোধনানাগার পর্যন্ত হাটলক্ষèগীঞ্জ, যোগনীঘাট থেকে রমজানবেগ, কাটাখালী ব্রীজ থেকে বাজনাবাড়ি, পশ্চিম দেওভোগ বিলেরকানি থেকে প্রয়াত পৌর কর্মচারী শাহ-আলম শেখের বাড়ি পর্যন্ত, রন্ছ ব্রীজ থেকে পারুলপাড়া পর্যন্ত ও মানিকপুর দশতলা থেকে গনকপাড়া মোড় পর্যন্ত সড়ক সড়কে শতশত খানাখন্দ আর গর্তের দৃশ্য পরিলক্ষিত হয়েছে।  

এদিকে, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, গণপূর্ত, জজকোর্ট ও সিভিল সার্জন কার্যালয়সহ সরকারি গুরুত্বপূর্ণ অফিসে যাতাযাতে দিনভর প্রানচাঞ্চল্য থাকে শহরের প্রানকেন্দ্র পুরাতন কাচারী সড়ক। আর পুরাতন কাচারী চত্বরের সড়কে চন্দ্রপৃষ্ঠের ক্ষতচিহ্ন স্পষ্টত: ফুটে উঠেছে। বছরের পর বছর সংস্কারের অভাবে যানবাহনে চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে পৌরসভার পশ্চিম দেওভোগ বিলেরকানি, সাবেক পৌর কাউন্সিলর মকবুল হোসেনের বাড়ি যাওয়ার হাটলক্ষীগঞ্জ সড়ক, যোগনীঘাট-রমজানবেগ সড়ক। এ সড়ক গুলোতে বিগত ১০ বছরে কোনো সংস্কার কাজ করা হয়নি বলে সেখানকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন।

আরও পড়ুন: ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাতিলের দাবিতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে মানববন্ধন

 বিভিন্ন যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের অভিযোগ হচ্ছে সম্প্রতি শহরের অতি গুরৃত্বপূর্ণ মানিকপুর এলাকার দশতলা থেকে থানারপুল ঘুরে কাচারী এলাকার শহীদ মিনার হয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয় সড়কে নামকাওয়াস্তে সংস্কার কাজ করা হয়েছে। এতে অতিবৃষ্টিতে এ সড়কের কোন কোন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে এ খানাখন্দ থেকে বড় বড় গর্তে রূপ নিয়ে যানবাহন চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়বে বলে আশংকা করছেন তারা। যাত্রীরা বলছেন, এ সড়কে সংস্কার করার পরপরই অটোরিকশা কিংবা মিশুকে করে চলাচল করতে বেশ ঝাকুনি খেতে হয়। এতে ভুগতে হয় কোমড়সহ শরীর ব্যাথায়।

বিলেরকানি সড়কের সর্বত্র যেনো গর্ত আর গর্ত বলে জানিয়েছেন শহরের পশ্চিম দেওভোগ এলাকার ব্যবসায়ী ফয়সাল শেখ (৩৫)। তিনি বলেন, পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে পশ্চিম দেওভোগ থেকে বিলেরকান্দি আম্বিয়া মসজিদ পর্যন্ত সড়কে সংস্কারের ছোঁয়া পড়েনি। কবে হবে এ সড়কের সংস্কার-এনিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন এই ব্যবসায়ী। তিনি চান পৌরসভা কর্তপক্ষ সড়ক সংস্কার করে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের লাগাম টানবেন।

 শহরের দক্ষিন কোর্টগাঁও এলাকার কাউসার আহমেদ বলেন, প্রথম শ্রেনীর পৌরসভা হলেও সড়কে যাতায়াতের সুবিধা ভোগের ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি। আমার এলাকার লিচুতলা থেকে যে সড়কটি শহরের প্রানকেন্দ্র পুরাতন কাচারী মোড় গেছে, সেটির অবস্থা খুবই নাজুক।

 হাটলক্ষীগঞ্জ এলাকার সাইদুর রহমান সাঈদ বলেন, আমাদের এলাকার সড়কটিতে সাবেক কাউন্সিলরের বাড়ি। তিনি সাবেক সংসদ সদস্যের অনুসারী ছিলেন। এতে তৎকালীন মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এ সড়কে কোন কাজ করেননি। তাই এ সড়কের বেহাল চিত্র দীর্ঘদিনেরই।

 অটোরিকশা চালক মঞ্জু মিয়া বলেন, এইটা একটা ছোট্ট শহর। এখানে রাস্তা এমন বেহাল অইলো যে, কেহ চোখে দেখতাছে না। কেননা গাড়ি নিয়া বের অইলেই ঝাঁকুনিতে ঝাঁকুনিতে কোনো দিন ব্যাটারি খুলে পড়ার উপক্রম হয়।  কোনো দিন আবার গাড়ীর ব্রেক ভাঙে। আমাদের থাকতে হয় চিন্তায়। ভাড়া নিয়া গাড়ী চালাই। কিছু অইলে আমগো দোষ দেয় মালিক।

 এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার প্রকৌশলী মো. মোশারফ হোসেন বলেন, পৌরসভার অনেক সড়কেরই সমস্যা রয়েছে। সড়ক সংস্কারসহ পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের জন্য প্রায় ২০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়ে কর্তৃপক্ষ। কাজেই আশা করছি, সড়কের সমস্যার সমাধান হবে।