পাবনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা পরিবহণ ধর্মঘট প্রত্যাহার
পাবনার সব রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা পরিবহণ ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সাথে মিটিং করে এই ধর্মঘাট প্রত্যাহার করেন জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়ন । ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার এবং শাস্তির আওতায় আনার আশ্বাস দেওয়ায় ধর্মঘাট প্রত্যাহার করেন আন্দোলনরত শ্রমিক সংগঠনগুলো।
এর আগে পাবনা থেকে সব রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দেন পাবনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন। বুধবার সকাল থেকে পাবনা থেকে ঢাকাসহ অন্যান্য রুটে বাস, ট্রাকসহ অন্যান্য পরিবহণ চলাচল বন্ধ করে দেন তারা । এতে দুর্ভোগে পড়ে যাত্রীরা। তারা বিকল্প উপায়ে গন্তব্যে যায়।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে আগামীকাল ৮ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে
জানা গেছে, মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে পাবনার ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া মোড় থেকে মাই লাইন পরিবহনে যাত্রী তোলা নিয়ে বিআরটিসি বাসের শ্রমিকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর নাটোর গিয়েও আবারও কথা কাটাকাটি হয় তাদের মধ্যে। রাজশাহীর বানেশ্বরে যাত্রী তোলা নিয়ে বিআরটিসি ও মাই লাইন বাসের শ্রমিকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মাই লাইন বাস শ্রমিকদের মারধর করে বিআরটিসি বাস শ্রমিকরা।
এ ঘটনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নকে জানালে বিষয়টি গতকাল রাতেই মীমাংসা করে দেওয়ার কথা বলেন মোটর শ্রমিকের নেতারা। এ ঘটনায় রাত ৮টার দিকে মীমাংসা করতে বসে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন। এমন মীমাংসা সময় বিআরটিসি বাসের শ্রমিকরা লাঠিসোঁটা ও জিআই পাইপ দিয়ে মোটরশ্রমিক ইউনিয়ন পাবনা কার্যালয়ে ব্যাপক হামলা চালিয়ে শ্রমিকদের মারধর করে চলে যায়। এছাড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয় পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গুলিতে নিহতের মরদেহ নিয়ে থানা ঘেরাও
এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল রাত ১০টার দিকে মোটর শ্রমিকদের মিটিংয়ে পরিবহণ ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে সন্ত্রাসীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ভোর থেকে কোনো পরিবহণ চলবে না। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে পাবনা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন।
পাবনা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক ফিরোজ খান বলেন, জেলা প্রশাসক ও এসপি মহোদয়ের সাথে আমাদের কথা হয়েছে তারা আমাদেরকে আশ্বাস দিয়েছেন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার করা হবে। সেখানে প্রশাসন এবং শ্রমিক ইউনিয়নের সবাই উপস্থিত ছিলেন সবার সাথে কথাবার্তা বলে এবং সাধারণ মানুষের দুর্ভোগে কথা চিন্তা করে আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্দোলনরত শ্রমিক সংগঠনগুলোর মধ্যে পাবনা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক আমিরুল ইসলাম ইসহাক জানান আমরা ডিসি স্যার ও এসপি স্যারের আশ্বাস ধর্মঘট স্থগিত করছি। ডিসি স্যার আমাদেরকে আশ্বাস দিয়েছেন যে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের আইনের আওত আনা হবে। যারা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের অফিস ভাঙচুর করেছে তাদের নামের লিস্ট আমরা প্রশাসনকে দিয়েছি। অপরাধীদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করবে প্রশাসনের এই আশ্বাসে আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছি। অপরাধীরা গ্রেফতার না হলে আমরা ৪৮ ঘণ্টা পর আবারো ধর্মঘটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিব।





