বাউফলে ইন্টারনেট ঠিক করার কথা বলে ঘরে ঢুকে তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ

পটুয়াখালীর বাউফলে মোবাইলে ওয়াইফাই ইন্টারনেট সংযোগ ঠিক করে দেওয়ার কথা বলে ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক এক তরুণীকে (১৬) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার ধুলিয়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী ওই তরুণী স্থানীয় একটি মাদ্রাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার বাবা পেশায় একজন জেলে।
এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল প্রভাব বিস্তার করছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
আরও পড়ুন: নাজিরপুরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, ঘটনার দিন (শুক্রবার) রাত ৮টার দিকে ওই তরুণীর মা ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন। এ সময় সে (তরুণী) ঘরে একা ছিল। এই সুযোগে ইন্টারনেট ঠিক করে দেওয়ার কথা বলে একই বাড়ির আহাজার আলীর ছেলে মো. রাশেদ (২০) ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। একপর্যায়ে হাত-পা চেপে ধরে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
ভুক্তভোগী ওই তরুণী বলেন, "আমি ধর্ষণের শিকার হয়েছি, যা এলাকাবাসী সবাই জেনে গেছে। এখন আমি বাড়ির বাইরে বের হতে পারি না। মাদ্রাসায় যেতে পারি না। আমাকে যদি ওই ছেলে বিয়ে না করে, তাহলে আমার আত্মহত্যা ছাড়া কোনো পথ নেই।"
আরও পড়ুন: পিরোজপুর জেলা বিএনপির নতুন কমিটিকে জামায়াতের শুভেচ্ছা
ওই তরুণীর মা বলেন, "ছোট মেয়েকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম। বাড়িতে আমার বড় মেয়ে একা ছিল। ডাক্তার দেখিয়ে বাড়িতে এসে দেখি সামনের দরজা বন্ধ। জানালা দিয়ে দেখি ঘরের মধ্যে ওই ছেলে। পেছনের দরজা দিয়ে ঘরে ঢুকে দেখি দুজন উলঙ্গ অবস্থায়। তখন ওই ছেলেকে আটকে রাখার চেষ্টা করি। তখন সে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। ছেলে পক্ষ টাকা দিয়ে নেতা ধরেছে। তাই তারা কোনো সালিশ মানে না। এখন আমরা আইনের কাছে বিচার চাইব।"
ওই ভুক্তভোগী তরুণীর চাচা বলেন, "চেয়ারম্যান দুই পক্ষ নিয়ে বসে বিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। তবে ছেলে পক্ষ টাকার বিনিময়ে স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করেছে। তাই তারা বিচার মানে না।"
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছেলের বক্তব্য নিতে তার বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার বাবা জানিয়েছেন, তাকে (ছেলেকে) ঢাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন।
ছেলের বাবা আজাহার আলী বলেন, "আমরা একই বাড়ির মানুষ। আমার ছেলে নেট ঠিক করতে গেছে। কোনো অপকর্ম করেনি। তারা ষড়যন্ত্র করে আমার ছেলেকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।"
এ বিষয়ে ধুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, "মেয়ের পরিবার পরিষদে এসেছিল। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী এর বিচার আদালতের মাধ্যমে হয়, সালিশের মাধ্যমে নয়। তাই তাদের আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।"
এ বিষয়ে বাউফল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম বলেন, "এমন কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"