পটুয়াখালীতে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, পুলিশের ওপর হামলা, আহত ৭, গ্রেফতার ৩

পটুয়াখালীতে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। বুধবার রাতে সদর উপজেলার লোহালিয়া ইউনিয়নের পালপাড়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাধ্য হয়ে শটগানের দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যসহ মোট সাতজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতরা পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লোহালিয়া ইউনিয়নের পালপাড়া বাজারে সোহাগ মাঝি (পিতা রফিক মাঝি, সাং পাজাখালি) ও মফিজুল মৃধা (পিতা সুলায়মান মৃধা, সাং পাজাখালি)—এই দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। বুধবার সন্ধ্যায় সোহাগ মাঝি প্রায় ২০-২৫ জন অনুসারী নিয়ে পালপাড়া বাজারে প্রবেশ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় মদপানে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে আরও ১
বিষয়টি স্থানীয়রা জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে জানালে পটুয়াখালী সদর থানা থেকে বিট অফিসার এসআই রাসেল, এএসআই জহিরুল ইসলাম, এএসআই আব্দুর রহমান এবং মোবাইল-১১ টিম ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে যায়।
পুলিশের উপস্থিতি দেখেই সোহাগ মাঝির অনুসারীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায় বলে জানা যায়। এ সময় পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং এসআই জহিরুল ইসলাম, এএসআই আব্দুর রহমান, কনস্টেবল মুহিবুল্লাহ ও ড্রাইভার কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম আহত হন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে উৎপাদনশীল করতে হলে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে: ড. মঈন খান
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শটগান থেকে দুই রাউন্ড গুলি ছোড়ে। পরে সোহাগ মাঝির দল দা, সুরকি ও লাঠি নিয়ে মফিজুল মৃধার ওপর হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) অপু চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) সাজেদুল ইসলাম সজল এবং ওসি পটুয়াখালী সদর থানা ইমতিয়াজ আহমেদ ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আহত মফিজুল মৃধাসহ অন্যান্য আহতদের পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশের আহত সদস্যদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য স্পিডবোটযোগে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ঘটনার পর এলাকাজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বাজার ও আশপাশের এলাকায় এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) সাজেদুল ইসলাম সজল বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই ঘটনায় পটুয়াখালী সদর থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযান চালিয়ে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া চলমান। আহত পুলিশ সদস্যরা পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন, বর্তমানে তারা সুস্থ রয়েছেন।